। মুমূর্ষু।

চেনা জানলার পাশে অলস বিকেল কাটে
পর্দার ফাঁক দিয়ে রোদ উঁকি দিয়ে নেয় কুশল খবর
একলা কফির কাপে আরামচুৃুমুক মারি বসে
এখনো জ্বলে নি আলো, সূর্যের শেষটুকু নিংড়ে নিচ্ছে যেন ঘর।
জানলার পাশে এক বয়স্ক চেয়ার থাকে, সেটাতেই বসা অভ্যেস,
রুটিন নিয়ম মেনে আজও তার হয়নি খেলাপ
পাশের বাড়ির ছাদ কিঞ্চিৎ যায় দেখা, লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা,
কয়েকটা টব আছে, উপচিয়ে ফুটে তাতে বেলি জুঁই টগর গোলাপ।
ফুল কিছু চিনি না বিশেষ। ওই মাঝে মাঝে বিয়ে বা জন্মদিনে বোকে টোকে কিনেছি কখনো
তাই বলে বাগানে খুরপি কোদাল মারার সখ নেই মোটে,
তবুও আজ পড়ন্ত বেলাতে, একমনে দেখি ছাদ, রেলিং, গোলাপ,
কারণ, বিকেলে প্রায়ই ওই রেলিংয়ের ধারে আরেক মায়াবী আলো ফোটে।
সে আলোর নাম জানি। তাই বলে তোমাকে বলবো না
নামটা উহ্য থাক, মশালের মতো আসে বিকেলে সে মেয়ে
গোলাপ টগর ছার, সুর্যও ম্লান লাগে দাঁড়ায় যখন এসে রেলিংয়ের ধারে
হেরো রোদ্দুর এসে কিভাবে ধরা দেয় একপিঠ চুলে, জানলার থেকে তাই দেখি বসে চেয়ে।
মিনিট পনেরো কুড়ি, বড়জোর আধা ঘন্টা, ওটুক সময় শুধু ছাদ পায় তাকে
আমারও ফুরিয়ে আসা কর্কটি শরীরে ওটুকুই সারাদিনে ডানা মেলা চিলতে আকাশে
চলে গেলে জানলাটা  আস্তে বন্ধ করি, ওষুধ খাওয়ার ক্ষণ ঘনিয়ে এসেছে,
কটা দিন আছে বাকি জীবন ক্যালেন্ডারে, টের পাই রোজ যম আরো কাছে আসে।
এ কাহিনীতে প্রেম নেই, জীবন জাপ্টে ধরে ভালোবাসা আছে
তফাৎ হতো কি খুব, মেয়েটার বদলে যদি দাঁড়াতো রেলিংয়ে এসে মুষকো পুরুষ?
ঘড়ি রোজ বলে যায় দিচ্ছি যেটুকু বাপু জেনো সেটা উপরি বা ফাউ
পড়ন্ত বিকেলে ছাদের রেলিংয়ে এসে আসলে জীবন দেয় মৃত্যুকে ঘুষ।

আর্যতীর্থ