। ও মানুষ।


যে ঈশ্বরের অনুমতি নিয়ে মানুষকে ভালোবাসতে হয়, তাঁর থেকে ও মানুষ, আমাকে বাঁচিও।
অভিজাত ক্লাবের দারোয়ানের মতো, যিনি ‘ মেম্বার্স অনলি’
কার্ড দেখেন শুধু ,
ও মানুষ, আমাকে দোহাই তাঁর থেকে দূরে নিও।
যদি তিনি আকাশ সৃষ্টি করে পৃথিবীর সবদেশে সমান চাঁদোয়া পারেন দিতে,
একই মাটি বানান হেঁটেচলে বেড়ানোর জন্য, সমান বাতাস দেন ফুসফুসে ভরে নিতে,
তবে মানষের ক্ষেত্রে রুদ্রাক্ষ বনাম তসবি বনাম ক্রুশের এই লড়াই বাঁধিয়েছেন কেন?
তিনি যদি বহুর মধ্যে এক এবং একের মধ্যে বহু, তবে মানুষ মেরে ঈশ্বর বাঁচানো ব্রিগেডকে
কেন সেটা বোঝাননি এখনো?
ও মানুষ, আমায় রক্ষা করো এমন ঈশ্বরের থেকে যিনি পূব আর পশ্চিমের মিল না খুঁজে ফারাক খোঁজেন,
যিনি গরীব আর বড়লোক, চাল কলা আর সোনাদানার উপঢৌকণের তফাত ভালোই বোঝেন।
যে শক্তি ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন, তিনি তার সন্তানদের অকারণ হিংসায় বাধা দিতে পারেননা, সে যুক্তি অচল।
আর সত্যিই সেটা হলে,  ও মানুষ, চেনা বা অচেনা তোমরা ছাড়া আমার তো নেই আর কোনো সম্বল!
বন্যার থেকে, ভূমিকম্প থেকে, অসুখ এবং উৎকণ্ঠা থেকে
যে সব মানুষেরা বাঁচান আমাকে,
তাঁদের খামোখা কেন বলবো ঈশ্বরের মতো?
বরঞ্চ অনুকরণে তিনি যদি হাত বাড়াতেন আর্তের ত্রাণে, দিনযাপনের যন্ত্রণা তবে কিছু কম হতো।
নাহ,  পূর্বজন্মের পাপের হিসেব আর অনন্ত নরকের আগামীর শাসানি দেওয়া পায়ে কে মাথা ঠেকাবে,
ও মানুষ, ও আমার আশপাশে বেঁচে যাওয়া দুঃখী মানুষ,
আমার যাপন জুড়ে ঈশ্বর হবে?


আর্যতীর্থ