। খাপছাড়া।


সবাই যখন বাণ চড়ালো দেখে পাখির চোখকে,
ধনুক টনুক গুটিয়ে তখন বাঁচছি বিনা লক্ষ্যে
রকম দেখে বলেন গুরু করছো কি হে বৎস,
লক্ষ্যবিহীন বাঁচতে চাওয়ায় আসবে কেবল ধ্বংস।
বাঁচে তো সে  ধনুকে যে জ্যারোপনে সিদ্ধ,
নয়তো তোমার প্রতিটা পল বিরূপ শরে বিদ্ধ।
আয়ত্ত্বাধীন করতে চাইলে বেঁচে থাকার ছককে
লাইনে দাঁড়াও , ধনুক তুলে দেখো পাখির চোখকে।


আমায় তবু দুলিয়ে দিলো অলপ্পেয়ে বাতাস
বললো আহা চোখ কেন রে , পাখির দিকেই তাকাস।
কিন্তু তাদের উড়িয়ে দিস আকাশপটের প্রেক্ষায়
চড়িসনা তুই সবার মতো লক্ষ্যঘোড়ার এক্কায়
অল্প জীবন, যা দেখে নে যেমন পারিস  পৃথিবী,
হিসেব করাতে সময় নষ্ট , কোন কোন খাতে কি দিবি।
বাকিরা যখন পয়সা জমাবে, তোর সংগ্রহ স্মৃতিদের,
নদীর দিব্যি, ভাসিয়ে দে ওই তীরধনুকের নীতিদের
লড়াই মানেই যোগ দিতে হবে যুযুধান কোনো পক্ষে
সকলের বাঁচা হয় না অমন টিপ করে পাখিচোখকে।


গুরু দেখেছেন উপদেশগুলো স্রেফ চলে যায় নালাতে
আমি শুধু চাই রুটিনকে কেটে ধনুকের থেকে পালাতে।
তাঁর কাছে এই বাতাসের ডাক কুঁড়েমির ষড়যন্ত্র,
ক্লাসরুম থেকে হুজুগের ঝোঁকে বের করে আনা মন্ত্র।
অবশেষে এক শেষচেষ্টায় আমাকে ডাকেন কক্ষে
বিস্তার করে বলেন বুঝিয়ে সামাজিক দাঁতনখকে।
‘পাখির আঁখিকে লক্ষ্য করো হে, মন দাও যথাসাধ্য
তোমার জীবন কারোর খাদক, অথবা তুমিই খাদ্য।’


সেই থেকে ঘুরি বন আর বাদাড়ে, ক্লাসরুম থেকে বাইরে,
যেখানে যেমন জীবন জুটেছে, সেই মতো নিংড়াই রে।
পড়শীরা দেখে সন্দেহে ভোগে, সাবধান করে লোককে,
ফিসফিসে বলে ‘ পাগল কাঁহিকা, দেখে নি পাখির চোখকে।’


আর্যতীর্থ