। কতদিন আরো।


ক্লান্ত বাঁশেরা প্রশ্ন করে , কতদিন আরো?
নিয়মমাফিক থামা তো উচিত উৎসবেরও।
গণপতি থেকে মাঠে আছে তারা গাঁথা,
তেরপল বয়ে ঝিম অ্যাটলাস মাথা,
সাউন্ডবক্সে একই গান বেজে চলে অনন্তকাল,
বিশ্রাম নেবে কবে , বাঁশেদের সেইটাই আকুল সওয়াল।


বৃদ্ধ বাঁশেরা মাঝরাত্তিরে বলে অতীতের কথা,
( ওটুক সময় আইনের বলে সাময়িক নীরবতা)
বিশ্বকর্মা পুজো ছিলো বেশ এলেবেলে,
ছোটো বাঁশেদের সাজ সাদামাটা প্যান্ডেলে,
বড় বংশরা মাঠে নামতোনা দুগগাপুজোর আগে,
ধুনুচি নৃত্য, পাড়ার জলসা আজও স্মৃতি জুড়ে জাগে।


সেসময় পুজো মোটে চারদিন, দশমীতে ছিলো শেষ,
সিঁদুরখেলার পরে প্রতিমার ঠোঁট জুড়ে সন্দেশ।
দশ বারোদিন ছিলো আরামের ছুটি
কালীপুজো এলে আবার দাঁড়াতো খুঁটি,
বারাসাত বাদ দিলে সেইটাও একদিন মোটে
আধুনিক ভাসানেরা ক্রমেই যাচ্ছে পিছু হটে।


বুড়ো বাঁশ রাতে আরো নানা শোনায় কাহিনী
শহর চন্দননগরের দেবী পৃথক সিংহবাহিনী ।
বাকি সব জায়গাই হয়ে যেতো ফাঁকা শুনশান
যেসময় কলকাতা নাক ডেকে টেনে ঘুম যান,
সেসময় ওশহরে দিনের মতন জ্বলে আলোকিত রাত্রি
বৃদ্ধ বাঁশের বড় প্রিয় স্মৃতি হয়ে রন দেবী জগদ্ধাত্রী।


ছোকরা বাঁশের দল এসব উপাখ্যান শুনেই অবাক
এখন হুকুমজারি , প্যান্ডেলে সক্কলে খাড়া হয়ে থাক।
একটা ভাসান সেরে তক্ষুণি মনোযোগ আরেক বোধনে,
বাঁশের ক্লান্তিকথা কেবল আঁধার এসে চুপ করে শোনে
সহজিয়া সুখ নয়, টানা উৎসবে বিরক্তি হয় ক্রমে গাঢ়,


ক্লান্ত গণিকার মতো বাঁশেরা প্রশ্ন করে, কতদিন আরো?


আর্যতীর্থ