। জঞ্জাল।


এ পৃথিবীকে শিশুদের বাসযোগ্য করে যাবো আমি,
কার কথা ছিলো? শপথের ছদ্মতে কারো পাগলামি,
যিনি ভেবেছিলেন আগামী প্রজন্ম তাঁর মতো স্বপ্নময় হবে।
পৃথিবী নষ্ট করা তখন তো শুরু হয়েছিলো সবে,
দুটো  আণবিক বোমা মাত্র পড়েছে জাপানে,
লোকে জানেও না কার্বন ফুটপ্রিন্টের মানে,
দেশে দেশে উগ্রবাদ তখনও বাল্যকাল ছিঁড়ে খেতে শেখেনি,
যেসব রোজকার খবরে আমরা রাতের খাবার সেঁকে নিই,
তাদের কিছুই সে কবির কল্পনাতেও  ছিলো না,
দেশ থেকে দেশান্তরে ক্রমাগত বেড়ে চলা উদ্বাস্তু মিছিলও না।
কবি ভেবেছিলেন, চারদিকে যাকিছু জমেছিলো জঞ্জাল
সেসব সরিয়ে দিয়ে অনায়াসে আনা যায় নতুন সকাল।


আমরা শুনিনি, অথবা শুনেও অগ্রাহ্য করেছি সে প্রতিশ্রুতি,
(আজকের সুখ খুঁজে আগামী ভাসান দেওয়া চেনা বিচ্যুতি)
আমরা বাতাসকে করেছি অস্বচ্ছ, দুর্লভ করেছি জলকে,
খেলা ও খেলনা কেড়ে শিশু চিনিয়েছি বন্দুকের নলকে,
শৈশব বলি দিয়েছি ধর্মের পায়ে অথবা ইঁদুরের রেসে,
মনন ও চিন্তনে ভেদের আল দিয়ে মানুষ গড়েছি একপেশে,
শিশুদের আমরা আগামী ভাবিনি, ভেবেছি বর্তমান-বোড়ে,
পাতা ছাঁটি সখ করে , ভুলে গেছি জল দিতে তাদের শিকড়ে।
পেটভরা, তবু  হাঘর লোভের চোটে পৃথিবীকে আরো কামড়াই
সাফ আর করবো কি,  জঞ্জাল বনে গেছি দেখো আমরাই।
নিজেরাই বয়ে রোজ নানান উপায়ে শুধু আগামীর ক্ষতি টেনে আনি,
জন্মবধির , তাই শুনতে শিখিনি কেউ সময়ের প্রবল গোঙানি।


হে আশাবাদী কবি, এসে দেখে যাও আমাদের কালিদাসী কাজ,
কালকের শিশুদের জন্য এ পৃথিবী কেমন বাঁশযোগ্য করে যাই আজ।


আর্যতীর্থ