। ছাগল।


মোবাইল আপদ বাজালো অ্যলার্ম ,দিনগত পাপ শুরু,
মর্নিং ওয়াক এই চালু হবে,  চর্বি জমেছে পুরু।
আমাকে ভেবোনা ব্যায়ামাগ্রহী, ঘুম বড় ভালোবাসি,
ডাক্তার আর বউয়ের ধমকে, রোজ পাক খেয়ে আসি।
আজকেও তাই মুখটা কুঁচকে, জুতোজোড়া পড়ে নিয়ে,
ছটা বাজতেই হনহন হাঁটি, রোজ যাওয়া পথ দিয়ে।
হঠাৎ ই আওয়াজ আসে কোত্থেকে, কে যেন আর্ত ডাকে,
আকাশ কাঁপিয়ে বাতাস কাঁদিয়ে, ছাগছানা খোঁজে মা- কে।
সাইকেল এক টিংটিং যায়, সামনে চটের থলে,
ছাগলছানাটা ব্যাগের ভেতর, এদিকে ওদিকে দোলে।
ছানাটা বুঝেছে যেখানে যাচ্ছে, ফেরেনা সেখান থেকে,
আশেপাশে দেখা পথচারীদের, বোধহয় তা বলে ডেকে।
ভয়ের মধ্যে কান্না মেশানো, বুকে বেঁধা চিৎকারে,
ছানাটা চেঁচায়, যার মানে শুধু মৃত্যু বুঝতে পারে।
আরোহীটি বেশ নির্বিকারেই, সাইকেলে গড়গড়,
মাঝে মাঝে শুধু চেঁচিয়ে বলছে, ‘ অ্যাই ব্যাটা চুপ কর!’


পৃথিবী চলছে নিজের নিয়মে, সুখ শোকে বিনা দৃকপাত,
তাল না মেলালে বাকিদের থেকে পিছিয়ে পড়বো নির্ঘাত
সুতরাং ওই ছাগলের ব্যা, ক’মিনিট ছিলো স্মৃতিতে,
ভেসে চলে যাই গড্ডলিকায়, গতের রুটিন রীতিতে।
পাশের বাড়ির ছেলে জ্বরে ভোগে,  ( ডেঙ্গি মতান্তরে)
আমি তবু রাখি আপন খেয়ালে জমা জল জড়ো করে।
হেলমেট ছাড়া বাইকেই ঘুরি, চালানোর হাত পাকা,
( যদিও খবরে মাথা থ্যাঁতলানো লাশেরা মর্গে রাখা)।
হেডফোন কানে রাস্তা পেরোই , গাড়িকে করিনা কেয়ার,
অত দেখেশুনে জেব্রা ক্রসিংয়ে রাস্তা পেরোয় কে আর।
যেই পতাকাতে অন্যায়ও ন্যায়, আমি তার ক্রীতদাস,
রঙ দেখে বলি  কোনটা উচিত, কোনটা সর্বনাশ।
আমি শুধু জানি আমারটা নিতে, সমাজ আবার কি?
বেচে যদি দিই শিরদাঁড়া গোটা, কারোর বাবার কি?
যদি দেখি এই রুটিনে ব্যাগড়া, অমনি তারস্বর,


মাঝে মাঝে শুনি কে যেন বলছে, ‘ অ্যাই ব্যাটা চুপ কর!’


আর্যতীর্থ