।বিয়োগ।


বাইরে থেকে ডাক দিলি তুই অনির্বাণ!
' খেলতে যাবি?' দুপুর সবে শেষ,
মাঠের ঘাসের তপ্ত ধুধু ঠাণ্ডা হওয়া বাকি,
মায়ের সবে জুড়ালো চোখ কিছুক্ষণের মতো,
এমন সময় বেআক্কেলে বেতড়িপদ ছেলে,
বলবগলে আমায় ডাকিস খেলতে যাবি নাকি?
আমার তখন শ্যাম আর কুলের মাঝামাঝি হাল,
ক্লাসে আমার রোল নাম্বার তিন( দুই হতে হতে)
এবং সেটা রাখতে গেলে পড়াটা জরুরী।
তোর তো ব্যাটা যায় আসেনা, নিত্যই নিল ডাউন,
গেমস স্যারই একটু আধটু কৃপা করেন তোকে,
জানলায় তুই টেবিলে বই, কোনদিকে যে ঘুরি!
কোনদিকে ঘুরেছিলাম, মনে আছে কি তোর?
নিঃশব্দে ছিটকিনি খুলে বেরোনো চোরের মতো,
প্রথমে শুধু তুই আর আমি, তারপর বাকিরা একে একে,
রতন, পল্টু, ছোটো বাপি, গোবিন্দ , পলাশ,
সেদিন আমরা জিতেছিলাম এটাও মনে আছে,
যদিও বাঁচায় নি সেটা বাবার মারের থেকে।
আজ অনেকদিন পর আবার দুজন কাছাকাছি,
তফাতটা শুধু, আজ আমি তোর বাড়ির জানলায়,
আর তুই, ঘরের ভেতর, সাদা চাদর ঢাকা,
চোখে তুলসিপাতা, নাকে তুলো, তোর গিন্নি কাঁদছে,
ব্যাটা বেআক্কেলে বেতড়িপদ, বলাকওয়া নেই,চলে গেলি,
খেলতে যাবি বলে একবার ডাক না হতভাগা!


আর্যতীর্থ