।ভিড়।


সকলেই বিচারক হলে, ফাঁসি ছাড়া বাকি সাজা উঠে যাবে দেশে।
‘ ভিড় যেটা ধার্য করে, সেটাই সঠিক’ , সে দাবীর চাহিদারা বড় একপেশে,
সে চায় তড়িৎ বিচার কোনো আপাতপ্রমাণে, রক্তলোলুপ জিভে ঠোঁট চাটে আদিম হিংস্রতা,
ভুলে যায়, ভিড়ে মিশে পেটানোর লোভে, সকলেই ভুলে যায় অন্য কোনো সম্ভাবনার কথা।
এ সেই ভিড়, যারা বাক্যহীন ভরা রাস্তায়  নারীর শরীর কেটে ফালা করা দেখে,
নির্বিকার পাশ দিয়ে হেঁটে চলে যেতে পারে রক্তাক্ত আহতকে পথে ফেলে রেখে ,
যেখানে হত্যার অংশীদারীর সুখ নেই, আনন্দ নেই অসহায় মানুষকে বেধড়ক পেটানোর ,
সেখানে যায় না ভিড়, প্রতিটা মগজ পায় যুক্তির খোঁজ সে ঝামেলাকে পাশ কাটানোর।


রোগী মারা গেলে ভাঙচুর মারধোরে রে রে করে যেই ভিড় উৎসাহী হয়,
বহু খুঁজে খুঁজে তবু তাদের যায় না পাওয়া কিঞ্চিৎ সাহায্যে বাঁচার সময়।
বধূহত্যার পরে যে শ্বশুরবাড়ি হলো প্রতিবেশী জনতার  উন্মাদ আক্রোশে ধূলিসাৎ প্রায়,
সিরিয়াল ভল্যুম কমিয়ে সশব্দে আগে কেউ শুধোয়নি জানি,
ওই বাড়ি থেকে রোজ কার কান্না শোনা যায়।
বাস পোড়ান্তিদের কখনো পাবেনা খুঁজে কেউ আহতের জন্য রক্তদানের আয়োজনে,
পাবেনা কাউকে যে থানাতে খবর দেবে পাশের মাঠেই হওয়া কিশোরীর গণধর্ষণে।
জনতার হাতে শুধু হাতুড়ি উঠতে পারে,  সৃষ্টিরক্ষার  থেকে ধ্বংস সহজ আর অনায়াসও বটে,
কাজেই গণপ্রহার, দেশজুড়ে  হাসপাতাল গাড়ি বাস পড়শীর বাড়ি ভাঙচুর,
আইনকে হাতে তুলে তান্ডব নাচ নেচে জনতা বাজাতে থাকে ধ্বংসের সুর।


আমি তাই নিরালা রাস্তা দেখে সেই দিকে চলে যাই, ভিড় থেকে সরে যাই বহু বহু দূর।


আর্যতীর্থ