। বাইশে শ্রাবণ।


একরাশ মেঘ অশ্রুর মতো বৃষ্টি বুকে নিয়ে ভেসে চলেছে।
আকাশ তাই দেখে অবাক। ব্যাপার কি? এত কান্না নিয়ে মেঘ কোথায় যাচ্ছে?
মাঝবাতাসে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কার ঘরে আগুন লেগেছে?
শ্রাবণ তো শেষের দিকে, এখন আবার বৃষ্টির তলব কে দিচ্ছে?
মেঘগুলো একটু চুপ করে রইলো। তারপর এক সর্দারগোছের মেঘ বললো ' গেছো ভুলে?'
যে মানুষটা ব্যাপ্তিতে তোমার চেয়েও বিস্তৃত, যাঁর সৃষ্টির রামধনুতে আজও পৃথিবী রঙিন,
একজীবনের বিষাদ মন্থন করে যিনি সবার বাঁচার অমৃতরসদ এনেছেন তুলে,
আজই তো সেই স্বপ্নপথিকের চলে যাওয়ার দিন।
ভুলে গেছো তুমি তা আকাশ?
এমনই এক শ্রাবণসন্ধ্যায় পূর্ণিমাচাঁদ কত ম্লান হয়ে কেঁদেছিলো, মনে নেই তা কি?
বাতাসও সেদিন এক নিদারুণ হাহাকারে শুনেছিলো কোটি হাহুতাশ,
কতটা আঁধার হয়ে শোক নেমেছিলো, সেই কালো রাত তুমি ভুলে গেলে নাকি?
আকাশ স্তব্ধ হলো। তার মনে এলো সেই পরিচিত মুখ,সভ্যতার শেষ ঋষির।
পথ ছেড়ে সে মেঘদের বললো, যাও ,পৃথিবীকে দেখাও
কতটা বিষণ্ণ আজও আমাদের মন,
ঈশ্বর হারানোয় আমাদের কান্নারা ঝরুক অঝোরে ধরে রূপ বৃষ্টির,
ভেজা মাঠঘাটবাট, শহর গঞ্জ গ্রাম সবার আসুক মনে আজ সেই বিষাদিয়া বাইশে শ্রাবণ।


আর্যতীর্থ