। অবিনশ্বর।


সুযোগ ছিলো জাতপাত মুছে সমদর্শী  নাগরিক তৈরী করার।
ধর্মকে যার যার ঘরে তুলে রেখে, বাড়ির বাইরে শুধু দেশকে তুলে ধরার।
দরখাস্তগুলোতে কাস্ট আর ধর্মের খোপ অতীত বলে করা যেতো ঘোষণা ,
বিভেদকামী তাবত কন্ঠকে দাবড়ে বলা যেতো, ‘ খবরদার,এই দেশে এসব বলতে এসোনা!’
সমুদ্রের দিকে না গিয়ে ভাবনার নদীগুলো ক্রমে নালায় বদলেছে , সেটা অন্য কথা।
যে সুযোগ ছিলো গোটা দেশ জুড়ে এক অমৃতসাগর সৃষ্টি করার,
সেই সুযোগের নামই স্বাধীনতা।


পারতাম আমরা প্রতি ঘরে শিক্ষাকে পৌঁছে দিয়ে দীপাবলী আনতে দেশে,
ফুটপাত থেকে স্টেশন চত্বর, চাষীর কুঁড়ে আর শ্রমিকের ঝুপড়ির সব বাচ্চার পথ যেন স্কুলে গিয়ে মেশে,
সে ব্যবস্থা করা কারো অসাধ্য ছিলো না। প্রতিটি শিশুর মা আর বাবার ঠিক পরে,
তৃতীয় অভিভাবক হিসেবে যেন তার দেশকে মনে করে,
সে ধারণা প্রতি মনে রুয়ে দেওয়া কি এমন কঠিন কাজ ছিলো বলো ?
প্রতিটা প্রজন্ম অতীতের গতিহীন জাড্যে খামোখা অাটকে থেকে গেলো।
পঙ্কজ ফোটানোর  বদলে পাঁকে কিভাবে পাঁকাল হতে হয় শিখিয়ে চলেছি অযথা,
অথচ একটু ইচ্ছা করলেই গোটা দেশ পদ্মের গন্ধে ম’ ম’ করতো।
তবুও, ওই ইচ্ছের অধিকারের নামই স্বাধীনতা।


দু্র্নীতির বিরোধীতা জাতীয় কর্তব্য হওয়া উচিত ছিলো, অথচ আমাদের সততা আটকে রইলো সিনেমার নায়কে।
আমরা ঘুষ দিতে আর নিতে দুবার ভাবিনা, ভিডিওতে থোক নেওয়া নেতার ঝুলিতে ঠিক ভোট এসে ঢোকে।
আমরা বলতেই পারতাম, অসৎ-য়ের পক্ষে দেশের প্রতি নিষ্ঠা থাকা অবাস্তব,
বলিনি, তাই আজ ভোটের ফলাফল জেলে বসে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মাফিয়ারা সব।
আমরা বৈধ চিকিৎসাকে আইনে বেঁধেছি আর দৈব চিকিৎসাকে দিয়েছি বেলাগাম ছুট,
আইন ও পুলিসকে সাধারণের আওতার বাইরে রেখে অনায়াস করেছি ক্ষমতাবানের লুট,
অথচ এখনো ঘুরে দাঁড়ানো যায়,
‘ কিস্সু হবেনা’র গড্ডলিকার বদলে এখনো জাগানো যায়
‘ হতেই হবে’ র অবাধ্যতা,
এই সীমাহীন অন্ধকারের ঠিক মাঝখানে বসে আলোর ওপরে রাখা যে বিশ্বাস,
সেই অবিনশ্বর আশারই আরেক নাম স্বাধীনতা।


আর্যতীর্থ