।  ছেলেবেলার খোঁজ।


ভালো রিপোর্ট কার্ড, স্পোর্টসের প্রাইজ, চরিত্রের শংসাপত্র কিছু নিয়ে,
সব কিছু দেরাজে রেখেছো বেশ তালাচাবি দিয়ে।
মাঝে মাঝে খুলে দেখো, কবে কোন সালে 
ইতিহাসে নব্বই, অঙ্কে পেয়েছিলে একশো পুরোপুরি,
স্কুলের রেকর্ড হতো বাংলার নম্বরটা না ভোগালে! 
সেই সব প্রায় শত নম্বরে অহমিকা ভরে, ফোল্ডারে রাখো তুলে অতি যত্ন করে, যেন নিজের মুঠিতে ভরে রেখেছো এক গোটা ছেলেবেলা। নম্বর,  শংসা আর প্রাইজের মেলা, তাই নিয়ে খেলা করে ভেবে বসো ছোটোবেলা এমনই তো হয়! আজকে নষ্ট করে কিছুটা সময়, মুঠি খুলে দিয়ে চলো উড়ে যাই, স্মৃতিদের ধুলো ঝেড়ে পেছনে তাকাই। যেই ছেলেবেলা আছে ভাঙা ব্যাটে বলে, শিষ ভেঙে পড়ে থাকা রঙপেন্সিলে,
এসো না ফেরাই সেই ছোটো ছোটো পল, শংসা নিয়েছে যাকে বেমালুম গিলে। মনে করে দেখো সেই ছোটো গাছটাকে,  বহুদিন থিতু ছিলো গলিটার বাঁকে, দূর থেকে দেখলেই ধক করে মনে হতো বাড়ি এসে গেছে। আলগোছে বড় হওয়া কুকুরের ছানা, পেছন পেছন যেতো, টিফিনের বিস্কুট দেওয়া ছিলো মানা, কুঁই কুঁই করে তবু পিছু পিছু ঘোরে, যেদিন সে চলে গেলো বাসচাপা পড়ে, মনে আছে দুইদিন শুধু কেঁদেছিলে? দেওয়ালের কোণে, চুপিচুপি পেন্সিলে কার নাম লিখেছিলে?
 হয়তো পাড়ার ছিলো, কিংবা ইস্কুলে, কথার খুঁজতে ছুতো বাহানা বানিয়ে, জানোও না, কোথায় যে গেছে তাকে বড়বেলা নিয়ে!
শুকতারা আর কিছু কিশোর ভারতী, ছেঁড়া মলাটের যত বেতালের বই, তাদেরও কত কি কিছু বলবার 
আছে, দেরাজের শংসাতে ছোটবেলা কই?


আর্যতীর্থ