কেউ কথা রাখেনি
আজ ও, কেউ কথা রাখেনা,


ইছামতী বলেছিলো, দুকূল ভাসিয়ে আমায় টেনে নিয়ে যাবে,
আমি ইছামতীর ভরা যৌবনে ভাসতে ভাসতে
মিলিত হবো পদ্মাসঙ্গমে -
চন্দ্র সূর্য কতো দিগ্বিদিকে সরে গেলো,
কতো জোয়ার ভাঁটা ইছামতীর বুকে - শরীরে -
দুচোখ ভরে দেখলাম -
কিন্তু ইছামতী এলোনা আমার কাছে ,
ইছামতীর বুকে এখন শুধু বড় বড় চর -
গতি তার রুদ্ধ - স্রোতহারা সে ,
হয়তো অচিরেই তার বুকের ওপর দিয়ে
তৈরী হবে রাজপথ -
চিররুদ্ধ হবে তার স্বচ্ছন্দ গমন,
ভরাযৌবনবতী হবে মন্দগামিনী,
অনন্তকাল বসে আছি - হয়তো থাকবো আরো -
কথা রাখেনি ইছামতী -


লালমাটির বাউলিনী বলেছিলো - গানশেখাবে -
দেহতত্বের গান - বারোঘর তায় একটা উঠোনের গান
গুসকরা হাট থেকে একডাকে
একটা একতারাও কিনে দিয়েছিলো,
সুরে বেঁধে দিয়েছিলো একতারার তার ,
কিন্তু, সেই বাউলিনী আর এলোনা,
কন্ঠিবদল করে কোনো এক বাউলের সাথে নাড়া বাঁধলে,
এখন হয়তো দোতারাতে মিলনের গান গাইছে -
আমার একতারা আজ বড়ো একা ,
বুকের তারটা শিথিল হয়ে গেছে তার-
দুদিন পরে হয়তো লৌহমল বাসা বাঁধবে তার গায়ে,
এখনো অপেক্ষায় আছে, ছিঁড়ে যায় নি,


আদ‍্যাপিঠের যুবতী ভিখারিনীটা বলেছিলো
আমি তাকে ভিক্ষা না দিলে নাকি
তার ভিক্ষার ঝুলি পূর্ণ হয় না,
চিরকাল সে আমার জন্যে আমার কাছে হাত পাতবে
তাতেই নাকি ওর সুখ - ওর আনন্দ,
হয়তো আমাকে রোজ দেখতে চায় -
হয়তো একটু ভালোবাসে ,
কিছুটা আবেগে কিছুটা অমোঘ টানে -
প্রতিদিন ছুটে গেছি তার কাছে ,
খুচরো যা পাই তাই নিয়েই -
সেই ভিখরিনী আজ আর বসেনা ভিক্ষার ঝুলি হাতে
হয়তো ছেড়ে দিয়েছে মাধুকরী ব্রত !
খুঁজে পেয়েছে নিশ্চিত আশ্রয় -
আজ ও পকেটের খুচরো গুলোকে জমিয়ে রাখি,
যদি কোনো দিন দেখা হয় -
একসাথে উজার করে দেবো সব , যাকিছু সঞ্চয় ,


কেউ কথা রাখেনি - কেউ কথা রাখেনা -


অপেক্ষায় আছি- থাকবো - যতদিন -------????


##### কপিরাইট 2017 ###########