তাকে, রোজ দেখতাম পথের ধারে বয়স দশ এগারো
হাতে নিয়ে গোলাপ তোড়া - অপেক্ষাতে কারো !


অফিস ফেরত বাবুরা সব, তাদের আশায় থাকা
এক এক করে এগিয়ে দেবে গোলাপ ফুলের থোকা,


কেউ কেনে বা কেউ কেনেনা রোজ ঐ ফুলের তোড়া
একটা থোকা কেউ কিনলে, চু কিৎ কিৎ ঘোরা ,


" নাওনা বাবু একটা তোড়া বৌ কে ভালোবেসে
খোঁপায় গিয়ে গুঁজে দেবে, দেখবে কেমন হাসে "


ছোট্ট মেয়ের মুখে কেন পাকা পাকা কথা ?
সবার ঘরেই বৌ আছে যে বললো তোকে কে তা ?


হেসে বলে - নাওনা বাবু ডুবিয়ে রেখো জলে ,
দেখবে বাড়ি গন্ধে ভরা আমার গোলাপ ফুলে ,


নিত‍্য দেখি রোজ কিনিনা , মাঝে মাঝেই কিনি
মুখ ভরা তার অমল হাসি দেয় রোজ হাতছানি ,


একদিন সেই যাচ্ছি পথে পাশের সিটে বৌ
একটা নিলাম সঙ্গে দিলো আর একখানা ফাউ,


আমি বললাম এই মেয়েটা লাগবে নারে আর -
বললো হেসে বৌ দিদি কে আমার উপহার ,


এইভাবে বেশ বছর ঘোরে নিত‍্য দেখা হাসি
ছোট্ট মেয়ে কেমন যেন ভিরলো বুকে আসি ,


একদিন এক রাত্রি বেলায় অফিস ফিরতে দেরী
হঠাৎ দেখি এক জটলা ঐ জায়গা ঘিরি


গাড়ি টাকে সাইড করে এগিয়ে গিয়ে দেখি
ঐ তো আমার ফুলমালিনী রক্তে মাখামাখি ,


ছিন্নভিন্ন জামাখানা শরীর আঁচড় ভরা
ঠিকরে বেরোয় চোখের তারা মুখখানা হাঁ করা,


কে বা কারা সন্ধ‍্যে বেলা কাম লালসার রোষে
মেরে তাকে ফেলে গেছে পাশবিক ঔরসে ।


পাশেই পড়ে গোলাপ গাছা রক্ত লেগে ভেজা
রেঙেছে আজ মেয়ের রঙে লাল টুকটুক তাজা ,


কোলে নিয়ে মাথা খানা হাত রাখি তার নাকে
যদি কোথাও একটুখানি প্রাণ বেঁচে তার থাকে !


নিথর দেহ লুটিয়ে পড়ে আমার কোলে বুকে
একটুখানি ভালোবাসা দিলাম আমি ওকে ।


কোনোদিন ই বলবে না আর এই নে বাবু ফুল
চির তরে হারিয়ে গেল ফুল মালিনী ফুল ।