বৃষ্টির ঘ্রাণ
সাইয়িদ রফিকুল হক


তাজা বৃষ্টির কাঁচা ঘ্রাণ এসে লাগলো আমার নাকে
হঠাৎ আলসেমি টুটলো আর ঘুম গেল ভেঙে,
একনিমিষে খুলে দিলাম হাতের কাছের জানলাটা
যে-টুকু ঘ্রাণ ছিল বাকী—দৌড়ে এসে ঢুকলো আমার ঘরে।
আহা কী পবিত্র বৃষ্টির ঘ্রাণ! আর কী মিষ্টি!
মনটা ভরে গেল বৃষ্টির ঘ্রাণে উন্মত্ত বাতাসে,
সদ্যোজাত কুসুমের মতো তারা ফুটছে প্রকৃতির বুকে।
এমন সুন্দর বৃষ্টি আর-কোথাও নাই—
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বৃষ্টি ঝরে আমাদের বাংলাদেশে,
হাসতে-হাসতে, খেলতে-খেলতে, কাঁদতে-কাঁদতে
বৃষ্টি খেলা করে আমাদের সোনার বাংলাদেশে।
এমন সুন্দর বৃষ্টি দেখে পাগল হয়েছে বাংলার কবি,
আরও কত ভাবুক, আরও কত তাত্ত্বিক, আরও কত মনীষী,
বাংলার বৃষ্টির অপরূপ শোভার কথা শুনে
ভিনদেশের কত যুবরাজ ছুটে এসেছে বাংলার বুকে—তারা
বাংলার বৃষ্টি দেখবে বলে ঘুরে বেড়িয়েছে নগরে-বন্দরে।


বাংলার বৃষ্টিগুলো খুব রোম্যান্টিক আর খুব দুষ্টু,
আর ওদের চোখে-মুখে সে-কী লাজুক-লাজুক-ভাব!
বাইরে তাকিয়ে দেখি বাংলার বৃষ্টি ঝরছে কবিতার মতো,
কী অপরূপ ছন্দ তার! আর কী চমৎকার প্রকাশভঙ্গি!
আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে ঝরছে মোহন-মধুর বৃষ্টি।
এই বৃষ্টিগুলোকে আমি চিনি—আর খুব চিনি,
এরা শৈশবে আমার সাথে কত খেলেছে!
আর আমাকে কতদিন দুষ্টুমি করে ভিজিয়ে দিয়েছে,
স্কুল থেকে বাড়িফেরার পথে ওরা জোর করে
আমাকে ভিজিয়ে দিয়েছে দিনের মধ্যে কয়েকবার।
আরও কতদিন ওরা জোর করে আমাকে আদর করেছে,
আর আমি বাড়ি ফিরেছি ভেজা বই-খাতা হাতে।
কত সুন্দর ছিল আমাদের সেইসব দিন!
সকালে-বিকালে বুক ভরে নিতাম তাজা বৃষ্টির কাঁচা ঘ্রাণ।
আমি বৃষ্টি বড় ভালোবাসি—বৃষ্টি আমার বন্ধু,
জানলাটা তাই খুলে দিয়েছি বন্ধুর আগমনে,
এবার শুভেচ্ছা জানাবো আমার চিরদিনের প্রিয়বন্ধুকে।
তাজা বৃষ্টির কাঁচা ঘ্রাণে ভরে উঠুক আমার ঘরখানি,
তাজা বৃষ্টির এই কাঁচা ঘ্রাণে মনটা হবে আরও পবিত্র,
আজ সারাদিন ঘরে বসে শুনবো বৃষ্টির অমর কবিতাখানি,
আর দেহ-মন শুচিতায় ভরাবো তাজা বৃষ্টির কাঁচা ঘ্রাণে।



সাইয়িদ রফিকুল হক
পূর্বরাজাবাজার, ঢাকা,
বাংলাদেশ।
১৪/০৬/২০১৭