আমি পাঠক চাই
সাইয়িদ রফিকুল হক


কবিতার পাঠক কি কমে যাচ্ছে?
নাকি ঘুমিয়ে আছে কবিতার পাঠক?
আমার পাঠক প্রয়োজন—শুধু পাঠক।
আমি তোমাদের মতো কবি চাই না
আমি পাঠক চাই পাঠক,
আমি গুণবান পাঠক চাই,
আমি যে পাঠক বড় ভালোবাসি,
তাই, আমি শুধু পাঠক চাই পাঠক।
তোমরা আধখেঁচড়া কবিতার কবি
সরে যাও আমার চোখের সামনে থেকে,
তোমাদের কবিতার পংক্তি শুনলে
আমার মনে পড়ে, আর খুব মনে পড়ে:
বেশ্যার খরিদ্দার-জোগারের নির্লজ্জ কৌশলের কথা।


চাটুকারের বিশেষণযুক্ত বাক্যগুলো এখন
খুব জোরসে কবিতার মাঠে দৌড়াচ্ছে!
আর বুদ্ধিহীন বলদগুলো জাবর কাটছে
বড়কবি হওয়ার আশায় কবিতার ময়দানে।
চারিদিকে এখন শুধু কবি আর কবি!
আর বিশাল কবিতার মাঠে
পাঠক নাই একটাও!
সবাই এখন কবি হতে চায়,
আর সবার হাতে ভাসে কবিতার সমুদ্র!
দালাল-ভণ্ড-ব্যবসায়ী-কারবারি
আরও কত নফর ছুটছে কবিতার মাঠে,
শয়তানের পেচ্ছাবেও নাকি এখন কবিতা ঝরে!
আমি এমন পাষণ্ডের মুখে কবিতা শুনতে চাই না,
আর ভণ্ডের হাতে কবিতা রচিত হোক—আমি চাই না।
কবিতার নধরকান্তিদেহে সুযোগ বুঝে আঁচড় কাটছে
আরও কত অর্থলোভী-কূপমণ্ডূক পাতিশিয়ালের দল,
কবিতার সাম্রাজ্যে আরও বসে আছে
অলস মস্তিষ্কের যত্তসব শয়তান!


আমি এখন কোনো ভণ্ডের কবিতা চাই না,
আমি কোনো ভণ্ডকে কবি বলে স্বীকার করি না,
আমি কোনো ভণ্ড-অযোগ্য কবি চাই না সমাজে,
আমি এখন চাই না খাপছাড়া-কমার্শিয়াল কবি,
আমি চাই পাঠক—আর কবিতার গুণমুগ্ধ-পাঠক,
আমি চাই গ্রন্থপ্রেমিক-ভদ্রলোকের আনাগোনা,
আমি চাই কবিতার মাঠে হাঁটবে শুধু গ্রন্থপূজারী,
কবিতার প্রয়োজনে আমি চাই কবিতার পাঠক।


কবিতার পাঠক কি কমে যাচ্ছে?
আর কবিতা পড়ার মানুষ কি নাই দেশে?
যদি না থাকে মানুষ—তবে আর কবিতা লিখবো না,
আর যদি পশুর সংখ্যা বেড়ে যায় ভয়ংকরভাবে
তবে লিখবো কবিতা আরও,
কারণ, কবিতা পশুদের বিরুদ্ধে,
আর কবিতা চিরদিন পশুত্বের বিরুদ্ধে কথা বলে।



সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
১৬/০৭/২০১৭