সে ছিল বারোশ' আটষট্টির পহেলা বৈশাখ ,
সেদিনও সূর্য উঠেছিল লাল নিত্যদিনের মতো;
ভোর না হতেই তৃষ্ণা-কাতর মিশকালো কিছু কাক
উড়ে গিয়েছিল নদীপারে, মাঠে চাষার চোখেও ক্ষত।


ধু ধু  মাঠ জুড়ে শূন্যতা ভাসে, ফসলের বুকে দাহ,
দাবানলে দূর বনে বনে শত পশুপাখি অসহায়,
কারও মনে নেই বেঁচে থাকবার এতটুকু উৎসাহ,
সহসা আকাশে কালবৈশাখী ঝড়জলে ধেয়ে যায় ।


পাখি বাসাহীন, চাষা ভাষাহীন, অরণ্যহীন পশু,
গৃহহীন শত নরনারী; ঝড়-জল-রোদ পালাক্রমে;
বসুন্ধরার শাসক সেদিন ছিলো একা বিভাবসু,
সৃষ্টি সেদিন ছিল দিশাহীন সূর্য-পরাক্রমে।


এক-দুই-তিন  প্রতীক্ষা শুধু, সময় কাটে না আর,
তবুও জীবন থামে না; আকাশে চোখ মেলে কচিপাতা ,
পঁচিশে আকাশে উদিত শান্ত প্রসন্ন দিবাকর,
চিত্রগুপ্ত খুলে নিলো এক রবীন্দ্র-হালখাতা।


ভারত-তীর্থভূমিতে  উদিত এসেছ জ্যোতির্ময় ,
শত সূর্যের সমবেত তেজে দৈবাৎ ধরাধামে
সৃষ্টিমুখর, অবিনশ্বর, অক্ষয়, অব্যয়
রবীন্দ্রনাথ মানুষের বেশে অন্তরে এসে নামে।