তখন সবে মাত্র দশম শ্রেণীতে
উঠেছি।
ছোট কাল থেকেই কবিতা
ভালোবাসতাম
বলে একটু একটু কবিতা পড়তাম।
সংগ্রহে
ছিলো অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি
আর
সঞ্চয়িতা। একদিন নজরুলকে পড়তে
গিয়ে
মাথা বিগড়ে গিয়েছিলো। একটি
কবিতায়
তিনি লিখলেন," আমি বিধির
বিধান
ভাঙিয়াছি, আমি এমনি
শক্তিমান, মম
চরণের তলে মরণের মার খেয়ে মরে
ভগবান"।
কী লিখলেন তিনি এসব????
এতোবড় কবি
হয়ে এসব কী!!!!!
মনেমনে প্রশ্ন করলাম নজরুল কী
তাহলে
নাস্তিক ছিলো???
নিজে নিজে ঐটুকু বয়সে চিন্তা
করে শেষ
করতে পারছিলামনা। শেষমেশ
আব্বুকে
প্রশ্ন করলাম। আচ্ছা আব্বু, নজরুল
কি
নাস্তিক ছিলো???
আব্বু উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন
করলো
এই প্রশ্ন কেন???
আমি বললাম কারণ আছে, আমি
তাকে একটা
জায়গায় এভাবে পেয়েছি। তখন
আব্বুকে
পুরো কবিতাটা আবৃত্তি করে
শুনালাম।
আব্বু বললো আমিতো এখানে
নাস্তিকতার
কিছু দেখছিনা। আব্বু এসব বলে
কী!!! মাথা
আরো খারাপ হয়ে গেলো। আব্বুকে
বললাম
তাহলে ব্যাখ্যা দাও। আব্বু
আমাকে খুব সহজ
ভাষায় ব্যাখ্যা দিলেন। আব্বু
বললো," এ
কবিতায় নজরুল ভগবান বলতে
তৎকালীন
বৃটিশ শাষকদের বুঝিয়েছেন। যারা
আমাদের শোষন করেছিলো
সুদীর্ঘকাল ।
নজরুল তাদের বিরুদ্ধে
লিখেছিলেন। যে
কারণে তাকে কারাবরণও করতে
হয়েছিলো।
নজরুল বৃটিশের দেয়া বিধানকে
ভাঙার
কথা বলেছেন! নজরুল তার চরণ
বোলতে
বিপ্লবী তরুণদের ঐক্যকে
বুঝিয়েছেন। যে
ঐক্যের কাছে বৃটিশদের হার
মানার স্বপ্ন
দেখেছেন। মূলত নজরুল ছিলেন
তারুণ্যের
কবি। তিনি তার কবিতায় তরুণদের
জুগিয়েছেন সাহস, বৃদ্ধকে এনে
দিয়েছেন
যৌবণ। "
আব্বুর এই ব্যাখ্যা শুনে সত্যি আমি
অভিভূত
হয়েছিলাম। নজরুল সম্পর্কে আমার
ধারণা
পাল্টে যায়।