কবিতার শব্দে যৌনাঙ্গ ব্যবহার করলেই কী তা অশ্লীল হয়ে যায়। ঘেন্না করে। কবিতা তো তা নয়। সমাজের দর্পণ। কবিতা অশ্লীল হতে পারে তখনই যখন তাতে যৌন কার্যের কথা একত্রে বোঝানো হবে। এই ভূত পাঠকও কবিতায় আছে। পুরুষ সমাজের বিরুদ্ধে বললেই খেপে যায়। কবিতার ভূত একদিন এদের মাথায় চেপে বসবে। যৌনাঙ্গ বললেই অশ্লীল হয় আর খালি গা...লোম বললে যদি পাঠকের মনে কিছু জাগে...তখন। বিষয়টা মানসিকতার। কবিতা অনেক এগিয়ে গেছে। আর এরা পিছে রয়েছে। কবিতার ভালো ভূতগুলো ভর করতে পারে তো...তবেই তো সাহিত্য এগিয়ে যাবে।
কবিতা এগিয়ে যাওয়ার দিকে নজর নেই, শব্দ নিয়ে দৌঁড়াচ্ছে। সাহিত্য নিয়ে ভাবুন। অশ্লীলতা কবি বোঝে। কবি ব্যান্ড হলে হবে তবু সে সাহিত্য রয়ে যাবে। কবিতা কখন কি রেখাপাত করে তা কিছু মানুষ কখনই ঠিক করে দিতে পারে না। কবিতার নিজস্ব পথ রয়েছে। নিজস্ব চিন্তাধারা। কবিতার ভূত তার সঠিক পথ ধরুক। কবিতা সত্যদ্রষ্টা হোক। কবিতা কখনই পিছিয়ে যেতে পারে না। কবিতা নাগরিক চেতনার মুক্তি। গ্রাম্য উন্নতির সোপান। কবিতা শ্লীল অশ্লীল তা পাঠক বিচার করবে। সমাজ বিচার করবে।
কবিতা আইনত দন্ডনীয় বলে তো নজরুলকেও কারাবাস করিয়েছিল ইংরেজ, তা বলে সে কবিতাগুলি ব্যান্ড হয়নি। ইংরেজের কাছে তা অশ্লীল ছিল। আমাদের কাছে তাই শিক্ষণীয়। কবিতা বড়ই আপেক্ষিক। কবিতা চেতনার বহিঃপ্রকাশ। কবিতাকে ছোট করো না, নিজেরাই ছোট হয়ে যাবে।
নারীবাদীত্ব, আর নিজ শরীরে নারী মননকে নিয়ে এগিয়ে চলার ভিতর বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। সমাজ অনেকটা বদলেছে। মানসিকতাও বদলেছে। তাই কবিতার রকমফের তো আসবেই। এটাই স্বাভাবিক। সেটা বুঝতে হবে। কবিতার ভালো ভূত মনের মধ্যে রাখুন। অন্ধ কুসংস্কার রাখবেন না। ওঝা গল্পে ভালো, বাস্তবে নয়। চিকিৎসা দরকার এই অবিবেচনার। কবিতাকে তার নিজস্ব উজানে বয়ে যেতে দেবেন, তবেই মুক্তি। শব্দ নয়, কবিতার ক্রিয়া চেতনকে বুঝুন। কবিতার ভূত তো সকলের নয়, ভূতের কবিতা সকলের। তাই এই জ্যান্ত ভূতগুলোকে মারতেই হবে। তবেই কবিতা ও বাংলা তার পথ ও ভাষা তার ইতিহাসের ব্যাটন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। এটাই চেতনা গ্রন্থ দিবসের। আরও কবিতা পড়ুন ও পড়ান। যোনি, বীর্য শব্দ দুটি কফ, থুতু, জ্বরের মতোই বাস্তব। তাতে কবিতা কখনই অশ্লীল হয় না। বুঝলেন তো ভূত মানসিকতার দল। যদি ভাবেন অপমান করছি তাহলে ভুল করবেন। আমি আপনাদের অন্ধবিশ্বাসকে, আপনাদের বিতর্কের বিষয়টা স্পষ্ট করে দিতে চাই। আদিম গুহা থেকে বেরিয়ে একটু মহাবিশ্বের আলো প্রত্যক্ষ করুন। তবেই এক বিধান তৈরি হবে, জীবনের, কবিতার...আর মুক্তি তো কবিতাই দেবে...মহাপরিনির্বাণ...সেও এক কৃচ্ছসাধন। ভূত কালো মন নিয়ে সে কবিতায় পৌঁছানো যায় না।