তোমরা যাকে কবিতা বলো সেগুলো অনেক আগেই মৃত্যুর থেকে শুরু হয়েছে। আবার অনেক কবিতা জন্ম থেকেই মৃত্যুর কথা বলছে। তাই বর্ষার এমন দিনে মনে আসে কত চিন্তা। মনে হয় ছুটির এই আমেজ আসলে সত্য নয়, সত্য তো অনেক ছোট। অনেক বড় হল জীবন। যে কবিতারা জীবনের পথ খুঁজে পায়, সেগুলোই মানুষের মনে থেকে যায়। এমনও দিনে তারে বলতে তো পারি....এই ঘন ঘোর বরষায় তোমায় ছাড়তে না পারি...এই ভাবনা থেকে যদি ছন্দরা ডানা বাধে তবে তার সুর-তাল কবিতার গন্ধ নিয়ে আসে। কিন্তু আজ তো জন্ম মৃত্যুর আলোচনা।
ধরা যাক, আজ প্রেয়সির জন্য, প্রেয়সিকে ভেবে কবিতা লিখলাম। লিখলাম। কিন্তু সে কবিতা তো মৃত যখন সে প্রেয়সী থাকবে না। আবার আজকে মৃত প্রেমের কবিতাই অনেক বছর পর প্রেমিকা মনে করিয়ে দিলে তা জাগ্রত। কবিতা এমনই। কবিতা এই ভাবে এগিয়ে চলে। কবিতা এভাবেই স্ফুরন। এভাবেই স্বপ্নাতুর... দিশাহীন দিশা। কবিতার জন্ম হয়, মৃত্যু তো আটকে যায়। কেন যায়। কারণ কবিতা স্মৃতি। কবিতার স্মৃতিবিজরিত সফলতা এগিয়ে চলে। কাল ধরে, যুগ সন্ধিক্ষণে। হয়তো আমার কবিতা থাকবে না, কারণ আমি কবিতা লিখতে জানি না। কিন্তু তোমরা কবিতা থাকবে...তাই তুমি লিখতে থাকো। কবিতায় তুমি জীবিত কবি...আমি মৃত কবি। কবিতার এই রঙ্গমঞ্চ বড়ই অদ্ভুত।
এই মিউনিখে যে বন্দুক বুলেট চালালো...মানবতার উপর সে ধ্বংসের কবিতা লিখল, আর আমি প্রতিবাদী লেখা ছুড়ে দিলাম আমি সৃষ্টির সূচনা করলাম। তাহলে প্রতি মৃত্যু জন্ম দ্যায় কবিতার, আর কবিতার পরে যে খেদ জন্মায় তাই মৃত্যু ঘটায় কবি-পাঠকের। এ এক চিরন্তন চক্র। কবিতা তাই জীবনমৃত্যু ক্রস বর্ডারে দাঁড়িয়ে রোজ সূর্য ভোর দ্যাখে। আর আমি দেখি অস্ত যাওয়া প্রেম, ভালবাসার মিথ আমায় ভালবাসেনি, বা সবটাই মরিচীকা। এভাবেই কবিতারা কখনও পরজন্মে কাক হবে...কখনও শঙ্খচিল...কখনও বা নিশানাহীন এক মেঘ...ভেসে চলা পরদেশি মেঘ...জীবনমৃত্যু ছাড়িয়ে নতুন কবিতা, নতুন ভাবনা, নতুন সাম্রাজ্য কায়েমের ভালবাসা। ভালবাসার এক নতুন দিগন্ত।