তিস্তার জলোচ্ছাস তোমার ঠোঁটের থেকেও উদ্দাম
পাহাড়ি গানের কবিতায় অনন্ত প্রকৃতিকে প্রণাম
.
এইসব কথা শুনতে রাজি নয় পাঠকরা। তারা সহজ সরল ভাষায় জানতে চায় আমি কি উপত্যকার খোঁজ পেলাম!...আসলে নিজস্বী তোলার যুগে মানুষের ধৈর্য কমছে। ঝগড়া। একেন্দ্রীকরণ। তাই ভাষা জন্মের খোঁজ করতে চায় না। কবি ও কবিতার পথে যেতে চায় ফেসবুকবাসীরা। এখন পাশাপাশি দু’জন বসে ফেসবুক করতে লজ্জা পায় না। আধুনিকতার স্মার্ট যুগে এই একেন্দ্রীকরণ অনেক বেশি প্রচলিত। আর এসবের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলতে হবে। আসলে ক্যান্সারের বীজ নাকি রেডিয়েশনের ফলে ঘটছে। মোবাইল তাই ক্ষতিকারক। কিন্তু আমরা যে নিজেরাই নিজের মনের থেকে দূরে চলে যাচ্ছি। আমরা যা ভালবাসি সকলে তাই করে জীবন নির্বাহ করতে পারি!! আর যা রুটি রুজি হয় তা আমাদের শান্তি দেয় না। আসলে পড়া-ভালবাসা-পেশা আলাদা হয়ে যায়। অনেকে তো আবার পছন্দের বিষয় নিয়ে জনসংখ্যার ভারতে পড়তে পারে না। অনেক অর্থাভাব...অনেকের আর্থ সামাজিক অবস্থা। এই যেমন এই অধম নাসায় যেতে চেয়েছিল কিন্তু তার ন –তেও পৌঁছাতে পারেনি। নিজেকে ভাষা শ্রমিক বলে জাহির করে। অদ্ভুত। কবিতাই লিখতে শিখলাম না, কবি...ভাষা শ্রমিক। যাই হোক বোর না করে আসল কথায় আসি।
.
কবিতার গন্ধে তুমি আছো তাই কবিতা হয়েছে পর
আপন হয়েছে নেশাতুর বীর্য, নেশা ধোয়ায় মীন স্বর...
.
(স্বপ্নের মতো) বসে ছিলাম টিলার উপর। মনে হল কেও যেন ফেলে দিচ্ছে। মন বলল ওটাই পূর্ব জন্ম। আমি নাকি ব্রাহ্মণের পুত্র। তিনি মন্দিরের পূজারী। আমি বাঁশী বাজাই। গুরুদের নিয়ে মাঠে যাই। প্রত্যন্ত গ্রাম। রাজস্থান। মনে আসছে আমি তো ঐ রাজার মেয়ের প্রেমে ডাবুডুবু। মেয়েটিও চরম সুন্দরী। টানা টানা খোদাই করা মুখ, চোখ, থুতনি, ভুরু...স্তন, নাভি...পা, পায়ের পাতা...প্রতিটা লোমকূপের ঘাম ছন্দ তোলে। আর ভাবিয়ে চলে আমায় দূরবর্তী...ইতিহাসে। ইতিহাসের প্রেম গাঁথা। ইতিহাসের পথ পেরিয়ে প্রেমিকার ভাই আসে। স্বপ্নের মতো আমি বীর হয়ে উঠি...আমার প্রেয়সীর দাদাকে হত্যা করি। আর দাদার হত্যার দায়ে আমায় ফেলে দেওয়া হয় পাহাড় থেকে....(হিন্দী গল্পের মতো মনে হলেও এ স্বপ্ন আসে) সেই গল্পের মতো স্পর্শ আজও তোমাকে খুঁজে চলেছে প্রিয়তমা। হাজার হাজার নারী, সুন্দর শ্রী-এর মাঝে আমি তোমায় খুঁজিনি। শুধু খুঁজেছি তোমার কবিতা। তোমার ছন্দগুলোই তো কবিতা। আর সেই তোমার চেতনাই আমায় মূর্ত-বিমূর্ত কবিতা উপত্যকায় পৌঁছে দেবে।
.
নারীরা এ যুগে শিক্ষিত। তাই বড় অভিমানী। আর অন্য মেয়ে বন্ধুর দ্বারা পরিচালিত। (বিদ্রোহীরা ক্ষেপে যাবেন জানি) তবু বাস্তব যে কবিতার কথাই বলে। সে গালি হোক প্রকাশ্য বা সেই চ্যাটের কথা। বা সেক্স চ্যাটের স্ক্রিনশট পোস্ট। একটুতেই ঝগড়া করে আজকের নারী পুরুষ। নারীর কথা না শুনলে তর্ক করে। বলে রাগ নেই...অনুরাগ বোধহয়। আসলে মুক্তির স্বাদ খুঁজে চলে। আমি বুঝি এত শিক্ষিত হয়েও এই সাধ পূরণে মুক্তি কথাটাই কেন আসে। আসলে পুরুষতান্ত্রিকতায় তারা অবদমিত। তাই ধূমপান টু নিজস্বী....অনেক সাজ...মল...রেস্তোরা...উইকএন্ড পার্টি। এর মধ্যেও তো কবিতা রয়েছে। এ যুগের কবিতা। আসলে কবিতায় যেমন ছন্দ আছে, তেমন আছে বিচ্যুতি। বিচ্যুত হওয়ার প্রতি পদক্ষেপে কেমন করে যেন ছড়িয়ে যায় কবিতার শোনা কথা। তাই গদ্য অনুপ্রাস অনেক বেশি করে ছড়িয়ে যায় এই কবিতার বিশ্বে।
.
বিষ দাঁত কার ভাঙবে আজ কে
নেলপলিশের নখ বলে দেবে সে...
.
কবিতার বিশ্ব বড় বাস্তব। এই যেমন রাত এগারোটার পর উবের থেকে নামা কোনও নারী আবার ধর্ষিত হয়। চেনা শহর, দেখা শহর পাল্টে যায়। আসলে ঐ কম পয়সায় ফোনে নেট। আর সেই নেট এ নিষিদ্ধ ইউ টিউব। লোভ। লালসা। হয়তো এগুলোই প্রতিবাদী কবিতা হয়। ভাগ্যিস সেই পাক স্ট্রীট আজ ইতিহাস। আবার অন্যদিকে কখনও লেসলি বাঁচিয়ে দেয় এক মা-কে। মা সুনীতা তার সন্তানের মুখ দেখতে পায়। মাত্র চারশো মিটারের জন্য স্পর্শ করা হয় না লেসলির শিখর চূড়া এভারেস্ট। তবু দয়া নয়...মানবিকতার জয় কবিতার মাঠে আমায় পৌঁছে দেয়। সেই বাংলা ভাষায় আমি লিখতে পারি...তা নিয়ে গর্ব করি না। কারণ বাংলা ভাষা আমি জানি না। এক জীবনে বাংলা ভাষা জানার ক্ষমতা আমার নেই। শুধু জানি সর্বত্র কবিতা আছে। আমি না পারলেও এই সব কবিতা জমা হবে সময়ের নিয়মে। আর সেই কবিতার হীরেরা কবিতার ক্ষণিতেই শোভা পাবে। আবার কালজয়ী চাঁদের পাহাড় লেখা হবে, আবার শংকর আসবে তার অ্যাডভেঞ্চারে।
গণধর্ষণ কোনও রোগ নয়, রোগ তো এভারেস্ট জয়
শিক্ষিত সভ্যতা শিরদাঁড়াহীন, কাপুরুষের সম্প্রদায়!!
.
কবিতার কথারা তাই মনের ভিতর প্রেম, ভয়, রাগ, অভিমান সমস্ত অবস্থার ছবিদের না পাওয়াকে হ্যাঁ পাওয়া করতে চায়। তাই হাজার হাজার না-কবিতারা জন্মায়, পোস্ট হয়। আর কবিতারা অপেক্ষা করে নতুন জীবনানন্দের ব্রাত্য ইতিহাসের লক্ষ্যে...নীরার কবিতা তাই স্পষ্ট থেকে অস্পষ্ট দিকশূন্যপুরে নিয়ে যায়। গালিফ, সুনীল, শক্তি বাবুরা তাই বলে ওরে নেশা করতে শেষ। কবিতা কী এত সহজে আসে...মাতাল হো....
.
প্রসঙ্গক্রমে আমি কোনও মূর্ত নেশা করি না। তবে বিমূর্ত কবিতার প্রাসঙ্গিকতায় আমায় ভাবায়। তাই পিন থেকে হাতি সব বেঁচতে পারি আমার মেধা দিয়ে...আসলে এখন তো কমোডিটির যুগ...তাই কবিতা বেঁচতে হয় নানা শৈলীতে। কেউ ঘুমিয়ে যায়, কেউ জেগে ওঠে আবার কেউ মুগ্ধ হয় সেই উপত্যকার খোঁজে...আমিও তাকিয়ে থাকি মৃত নির্জীব চাঁদের দিকে....ঝলসানো রুটি না আমার রোমান্টিক চুমু কোনটা কবিতার পথ হারিয়ে যায় সব...মাথাই পাগল আমার ভালবাসার জীবন কবিতার খোঁজে পায়ে ভলিনি লাগিয়ে এগিয়ে চলে....কিন্তু এ কি পাড়ায় পাড়ায় প্যান্ডেলে দুর্গা দেখা ...নাকি....এ যে কবিতার খোঁজ...ঐ তোমার মণির মধ্যে লুকিয়ে নেই তো সে কবিতা?