ঐ পাড়ার পাগলটা নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গুণতে থাকে। ধীরে ধীরে রাত নামে, সূর্যকে খুঁজে চলে...। আমি বেকার ছেলে, যেতে আসতে ওকে দেখি আর আমার প্রেমিকার জন্য কবিতা লিখি। প্রেমিকা আবার যাদবপুরের স্কলার আমার তো নন গ্র্যাজুয়েট কলার। তাই ধ্রুপদি বাংলাভাষার প্যান্ডোরার বাক্স ভোট গণনায় বন্দী হয়। চর্যাপদী সান্ধ্য ভাষারা সাধারণের অজানা থাকলেও মাত্সন্যায় পেরিয়ে কৃষ্ণ কীর্তনের হাত ধরে ভক্তিগীতি গাইতে গাইতে চৈতন্য এগিয়ে চলে। বাংলা ভাষায় তখন ভগবানের লীলারা কাব্যময়তায় চৈতন্য যুগের আগে পরে পাগল করতে থাকে...তখন আমিও হয়ে উঠি জগাই...আর তুমি মাধাই থুড়ি রাধাই। অনুদিত হয় সেই মহাকাব্যিক চারটি ছয়ের মতোই মহাভারত, রামায়ণ। তারপর ময়মনসিংহগীতির পথ বেয়ে সৈয়দ আলাওল আধুনিকতার মধুসূদনের সনেট রাজ্যত্বে এনে হাজির করে...রামমোহনের পথ ধরে। সেই যে বীজ বিদ্যাসাগর বপন করেছিলেন রবি ঠাকুরের গৃহশিক্ষকের বিদ্যে সেই বৃক্ষে পত্রাবলীগুলিকে বঙ্কিমবাবুর কৃষ্ণকান্তের উইল চালান করে। শ্রীকান্ত তো সেই পথ ধরেই জীবনানন্দের শঙ্খচিলকে বলে কেউ কথা রাখেনি সুনীল। কখন তোমার বাজবে টেলিফোন গাইতে গাইতে যখন লিটিলম্যাগ খুলে চায়ের কাপে চুমুক দিই নব্য বাঙালি বলে ওঠে তোমাকে চাই...শুধু তোমাকে চাই। তখনই তোমরা বলে ওঠো...ধ্রুপদি বাংলা যে অন্য...এসব ন্যাকামিগুলো জঘন্য...পরাবাস্তবতা কায়দায় আমি বলি তফাত শুধু শিরদাড়ায়।
আসলে প্রতিদিন ভাষাদের মৃত্যু হচ্ছে, তবে বাংলা ভাষার মৃত্যু হবে না কোনও দিন, অর্জিত ভাষার অন্য গ্রহের ঋণ। আমার প্রেমিকাও স্বপ্ন দেখে নিজের সন্তানকে চুমু খেতে খেতে মা ডাক শুনবে। নট মম। আই লাভ ইউ নয় খুশী হয় তোমাকে ভালইবাসি। অর্জিত ভাষায় অর্জিত শব্দ প্রবাহমান কাল ধরেই পরিবর্তিত হবে। সেটাই স্বাভাবিক। না হলে দু’লাইন, চার লাইন, দশ শব্দের গপ্প, অণু-পরমাণু গপ্প, মৌলিক-যৌগিক এতো রসায়ন জুটত না। আমার এই পাঠ শুনে যারা মনে মনে ভাবছে অসামশালা।  একবিংশের দ্বিতীয় শতক পরিবর্তনশীল ছিঃ ছিঃ কানে লাগে তালা। যুবসমাজ  এতো আতা মার্কা ভাষা নিয়ে ভাববে কেন। চাকরি জুটবে শুদ্ধ বাংলা বলে! যুবারা বলছে-- অনলাইনের যুগে মাইরি এসব ঘেঁটে ঘ। আমরা শুধু ঘাপলা করে নিজস্বি স্ট্যাটাসে বিশ্বাসী, তোমরা ঝিনচ্যাক ভাবো, চাবুক ছড়ানো প্রত্যাশি। ব্যাপক সব ভাষারা সংযোজিত সমাধান, ঘ্যামা যুগে তাই ফ্রাস্টুদের আহ্বান। আসলে বদলে বদলে যায় মুগ্ধতাগুলো, বাংলার র, স, ন-তে আসল বানানের ঘাপলাগুলো। ভাষা যে নদীর এঁকেবেকে চলা, মাঝি টু রাধা এভাবেই কথা বলা। ঐ পাড়ার পাগলটা কেন জানিনা এসব লেখে চিরকুটে, ওকেও বলেছিলাম একদিন কবিতা বুঝি না..ফুটনোটে।
বিশ্বায়নের সাথে গ্রীষ্মায়নে বরফ গলে জল, আর সেই জল ঢেকে দেবে সমস্ত স্থল। চারিদিকে তখন কেবলই পাল্টে যাওয়া ছোটবেলার শিলাবৃষ্টি, ঐ কালবৈশাখী দিনে কত কিছুই হত সৃষ্টি। বিশ্বাস করুন এসব নিয়েই এখনকার বাংলা, রোমান হরফে বাংলা লিখি, উন্নতি চরমে শিখি। এটাই ভাষা। নোয়াম চমস্কি তো ভাষা বিজ্ঞানের ছকগুলি স্পষ্ট করেই বিশ্লেষণ করেছেন, বাংলা ভাষা যে উদযাপন তা কবিয়ালরা ধরেছেন। এখন শুধু এগিয়ে চলা শংকর আমাজনে হীরে খুঁজে পাবেই, সেই পথ ধরে বাংলা ভাষা পরশপাথরকে ছোবেই। যাক সে সব তত্ত্বকথা, বোরিং সব ব্যথা, শুনতে পাচ্ছি আবহ সংগীত, ধ্রুপদী রূপতাত্তিক মিথ, তবুও ব্যকরণ কলি কালে তার মতোই রক্ত মাংস, আমায় প্লিজ মারবেন না আমি নই বাংলা ভাষার কংস।
ঐ যে শুনুন শান্তিনিকেতনের পথে পথে এসো হে বৈশাখের রব, পাগলা তখন জমে ক্ষীর করে পাগলির স্তব। আমিও একটা পাঞ্জাবি গায়ে বাঙালি হয়ে উঠি, আজ ও অষ্টমীতে বাঙালি সাজার রীতি। বসন্ত পঞ্চমী ও ১লা বৈশাখে তুই শাড়িতে ফাটাফাটি...অনেক ভুলভাল বকেছি এবার তবে কাটি...তবে ধ্রুপদী সত্য তো নিথর এক পুকুর...আজ বোধহয় আয়োজকরা আমাকেই বলবে কুকুর কুকুর কুকুর...