কবিতার মন ভাল নেই। মন ভাল থাকলে ব্যাকরণ মানত। কবিতা তাহলে হেঁটে যেত পাহাড়ি পথ ধরে। কবিতা তাহলে ডানা মেলত। স্বাধীনতার আলোতে ভাসিয়ে দিত যৌবন। ছড়িয়ে দিত জুঁই...রাজকন্যার পথ বেয়ে। কবিতা তো নীরব আলমোড়ার পথ ধরে হাঁটেনি। একটু নীরবে ম্যাপেল গাছের তলায় বসেনি। কবিতা যদি একটু সময় পেত, নতুন করে ভালবাসতে শিখত। কবিতা বড়ই যুদ্ধ দেখছে, রক্তক্ষয়ী বারুদ মাখছে, ধ্বংস হচ্ছে সভ্যতা, সম্পর্ক। কবিতা বড় বেদনায়। বিশ্বাস করো রবীন্দ্রনাথের মতো একটা আত্মা আবার তাহলে আসত। এই পৃথিবীতে। আসলে কবিতা অনেক বেশী একাকিত্বের অন্ধকার দেখেছে। সে আধুনিকতা, পরাবাস্তবতা সব পেরিয়ে এসেছে। এখন সে বড্ড সরল। সে জানে কবি কি লিখতে পারে, আর পাঠকই বা কয়জন। কবিতা তাই থমকে দাঁড়িয়েছে।
এখন অনেক রাত সাপটা এগিয়ে আসছে। এই সাপ যে লোভের। লালসার। যৌনতার। কবিতা তাই জুঁইয়ের গন্ধ পাচ্ছে, আর সাপ পাচ্ছে বিষের। বিষ তো মারতে জানে, বাঁচাতে জানে, কবিতা তো এত কিছু জানে না। সে শুধু ভিজতে জানে। যখন মন খারাপের কান্না আসে সে শুধু ভিজতে জানে। বৃষ্টিতে। মৌসিনরামের বৃষ্টির মেঘ চেরাপুঞ্জিতে মিশছে। কেন মিশছে বৃষ্টির মেঘবালিকার চুল তা হয়তো বৌঠান জানে। জানে একলা ঘরের টেবিলে, আলমোড়ায় বসে থাকা রবীন্দ্রনাথ। আর জানে কুয়াশা ঘেরা কবিতা।
কবিতা জানে না প্রিয়রা কতটা দামী
কবিতা করেছে আমায় বড্ড বদনামী।
কবিতা আমায় হারিয়ে দিয়েছে গান রবি
কোনও জন্মেই হতে পারব না মস্ত কবি।
প্রকৃতির থেকে চুরি করে বাঁচাই কবিতা
আলমোড়ার স্নিগ্ধতায় দেখেনি মনের ছবিটা,
উদার হয়েছি বৃষ্টির কাছে একটু মন কেমন
ওড়ে মেঘ, সাদা-কালো বারিষনামায় যেমন।
কবিতা তাই আসেনি আমার আঁচল জুড়ে
মনপাখি কবেই গেছে মনশূন্যপুরে উড়ে...