( অত্যন্ত আর্থিক অনটনে চলা আমাদের সেই ছেলেবেলার স্কুলটির যুগপৎ সুবর্ণ জয়ন্তী বছর এবং ছাত্র ছাত্রীর অভাবে বাংলা মাধ্যমের পড়ানোরও অন্তিম বছর ৷ একসময়ের বাংলা ভাষার অতি উৎকৃষ্ট মানের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বিহারের কাটিহার জেলা শহরে অবস্থিত ৷ অবহেলিত, ছোট্টো পরিসরের ' নেতাজি বিদ্যামন্দির ' এর অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী আজ সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত ৷ সেই স্কুলের স্মৃতিতে নিবেদিত ' ফিরে দেখা ' ৷ )



এই মাটিতে শুকনো ঘাসে
রোদে ধূলো পায়ে বহু হেঁটেছি
ঘুরেছি খেলেছি অনেক বছর
বহু শিশিরে কুয়াশা মেখেছি
তোর আমার এবং সবারই
সব মনে আছে আমি দেখলাম !
অনেক বৃষ্টি কিংবা ঘামে
ভিজে উঠতিস তুই, উঠেছি
আমি, সে, আরো কতকেই !
সব মনে পড়ে যায় আমারও
ইউক্যালিপটাসের গাছটা
বড় হয়ে গেছে, বয়স বাড়ছে
সময়ের নানা আঁকিবুকি
পেয়ারা ও পেঁপে গাছগুলো
বনতুলসির ঝোপের মাঝে
এখনও বেশ তেমনি আছে
অগোছালো আর ছড়ানো
সাধ আর সাধ্যের ফারাক
যেমন, গরীব গৃহস্থ সংসারে
কুল তেঁতুলের বীজগুলো বা
আইসক্রিমের কাঠিগুলো আজ
স্কুলমাঠে আর পড়ে নেই
আসলে বিক্রিটাই যে বন্ধ
ছাত্র ছাত্রী কমতে কমতে ...
বাতাসের ভাব আড়ি মিতালি
চুপকথা হয়ে থমকে পলকে
আমি কান পেতে শুনলাম,
' আরেকবার বল প্লিজ্ ! শুনতে
পাইইনিই, আরেকবার বল !'
ক্লাসরুমের দেওয়াল আর
থামগুলো সব একই রকম
আছে কি ?  এখন একটু যেন
কমজোর-ই দেখলাম !
সে তো কিছুটা, আমার দৃষ্টিও
ততটা রঙের প্রলেপও পড়েনি
যতটা পড়েছে মাথার চুলে
আমার এবং হয়ত অনেকেরই !
ছেলেবেলার সেই স্কুলটাকে
ভেবেছিলাম, ভূলে যাচ্ছিলাম
এখন দেখছি সবই জীবিত
মনের গহীন সবুজ অন্তরালে
নামতা শেষে ছুটির ঘন্টার মত  
নিশ্চিত মনে আছে, তোর,
ওদের এবং সবার বন্ধুদের-ই !