পক্ষী এখন মহা সংসারী পর্যুদস্ত এক গৃহিণী,
শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করে তাহার কাটে দিন-রজনী।
শ্বশুরালয়ে বনেদি কারবার নেই সে আগের মতন,
গঞ্জে পাট ব্যাপার ছাড়া সকলেরই হইয়াছে পতন।
এ বাটিতে পা রাখিলে সে ঝি-চাকরেরা সব হয় বিদায়,
সকল কর্ম একেলা একেলা তাহাকে করিতে হয় সদায়।
দিন যায়- মাস যায়- বছর গড়িয়ে গড়িয়ে আরো দুই,
পণের টাকা পক্ষীর বাবায় শোধ করিল না আর কিছুই।
সব বেচি নিঃস্ব বাবা এখন কিভাবে করিবে পরিশোধ,
মাস ছয় ধরে পায় না পক্ষী বাপ-মায়েরও কোনো খোঁজ।
খোঁজ নিয়া জানিতে পারিল দেশান্তরী হইয়াছে বাপ-মায়,
মাঝে মধ্যে নাকি তাহাদের দেখা যায় কাশী আর গয়ায়।
স্বামী তাহার ব্যস্ত সদায় সেই গঞ্জের কারবারে,
বাটিতে সে আসে না তেমন, আসে যদি তাও দরকারে।
কী জানি কী হয়েছে পক্ষীর শুধু থাকে চুপটি করিয়া,
বেহালী সে সংসারী চাপে আর বাপ-মাকে হারাইয়া।
মাস খানিক হইয়া গেল সে কালা জ্বরে ভুগিতেছে,
বিছানায় শুইয়া সে কবিরাজি ঝাড়ফুঁক সহিতেছে।
সবাই সবার কর্মে ব্যস্ত নেই খেয়াল কাহারো তত,
মৃত্যুর কোলে ঢলিয়া পরিল সে দিন গেল ধীরে যত।