কার্তিক শেষে অগ্রহায়ণ আসিলে কোনো এক বিহানে,
পক্ষীর জন্য বিবাহ প্রস্তাব নিয়া তেলী ঘটক আসিলে।
পাত্র সুদর্শন, বনেদি পরিবার, বড় গৃহস্থালি কারবার,
তেলী ঘটক শুধাইলে, এমন প্রস্তাব মিলিবে না বারবার।
বাবা শুনিয়া বিস্তার ঘটকেরে কহিল, তুমি ভাই অতি বড়,
মেয়ে আমি দিব বিবাহ কিন্তু মনে যে কষ্ট অতি তর।
শুনিয়া মা'য় কহে, অতশত চিন্তা তুমি আজ থনে ছাড়,
পক্ষী আমার লক্ষ্মী অতি থাকিবে না চক্ষুশূল কাহারো
অগ্রহায়ণের দ্বাদশীতে ঠিকঠাক হইল পক্ষীর বিবাহ,
সবকিছু জানিয়া পক্ষী বুঝিল সে যে প্রাণী এক নিরীহ।
ঐ মাসের অষ্টমীতে তেলী ঘটক নিয়া আসিল বার্তা,
দশ হাজার টাকা পণ চাহেন পাত্র পক্ষের বড় কর্তা।
পণ দেবার সামর্থ কি আছে কিছু বাবা মা'য় ভাবিয়া লয়,
কষ্টে ফাটে বুক তবু সমস্ত পণ দিবে বাবা'য় কথাটি কয়।
বিবাহের দিনে সমস্ত আয়োজন বাবায় নিয়াছে সারি,
জমি বাড়ি বেচি আট হইয়াছে দু'হাজার আরো বাকি।
লাল টুকটুকে বধূ সাজিলে মনে হয় যেন একখানা চাঁদ,
মা'য় দেখে বাবা'য় দেখে চক্ষের জলে মেটে না যেন সাধ।
বুঝাইয়া কোনো রকমে কর্তা বাবুরে বাকি রাখিল বিবাহ পণ,
বাবা মা'য় চক্ষের জলে ভাসাইয়া বিদায় দিল কলিজার ধন।