মেহেদী পাতা
         সবুজ অরণ্য


রোঁদে পুড়ে পিঠ, বৃষ্টিতে নেই ছাতা
তোমার নাম দিলাম মেহেদী পাতা।
বাহিরে সবুজ, ভিতরে লাল
কষ্ট তোমার নাজেহাল।


বেদনার তিরে তিক্ত-রিক্ত হৃদয়
অগ্নিগিরির জ্বালাময় জ্বলন্ত আগুন
জ্বলছে ধাউ ধাউ করে বুকে
পঁচাত্তুরের শোকে।


বুকের নদে নেই কোন স্রোত
আছে শুধু ঢেউ
কতজনে আসে যায়, দেখেনা তা কেউ।


দুঃখে ভরা পাহাড়ের বড় বড় স্তুপ
তোমার হৃদয় মাঝে বেঁধেছে ঝোপ।
ভিতরে ভিতরে ঘোমড়ে পোড়
বুকে পাও ভিষণ ব্যাথা
যখন মনে পড়ে আগস্টের কথা।


শিকারী বন্ধুক ছাড়ে, চামচিকায়ে বাঘ মারে
ছেলে-পুলে, স্ত্রীরে পাইকেরি হারে।


হে বঙ্গপিতা
তুমি ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে, সংগ্রামি দু-হাত নাড়িয়ে
বজ্রকন্ঠে বলেছ.....


রক্ত দিয়েছি আরো দিবো তবুও দেশকে স্বাধীন করবো
আমি বাঙ্গালী, বাঙ্গালীকেই ভালোবাসি
বাঙ্গালীর সুখেই আমার হাসি।


যিনি নিজের জীবন বাজি ধরে
মুক্তির ফরমান এনে দিলেন ঘরে
মোরা কি দিলাম তার তরে?
দিয়েছি দিয়েছি রক্তে ঘর ভরে!
অর্ধ্ব জীবন কাটিয়েছে জেলে
সুখের পাপড়ি দেখেনি মেলে
কতশত দিন কতশত রাত
হাতকড়ায় বাঁধা ছিলো হাত,
কোন দিন কোন জেলে, বুঝেনি চোখ মেলে
পাকবাহিনী মৃত্যুর দিকে দিয়েছে ঠেলে,
চোখের জলে বুক গেছে ভেসে
তবুও বাঙ্গালীর মুক্তিটাই চেয়েছ হেসে।


স্বাধীন করেছ দেশ, মুক্ত করেছ জাতি
প্রতিদানে পেয়েছ গুলির মাতামাতি,
গুলি করে খুলি নিয়ে ঘাতক মিটায় আশা
তখন কেন খাড়া হয়নি বাঙ্গালীর ভালোবাসা।
বাঙ্গালী আজ মুক্ত, নেই তাদের শোক
হাসি-খুসি ঘুরে বেড়ায় ফুলিয়া বুক
একবার দেখে যাও
চোখ ভরা অশ্রু আর জ্বালা ভরা বুক
যন্ত্রণার আগুনে জলন্ত তোমার মেয়ের মুখ।



হে বঙ্গমাতা
তুমি কতশত রাত, কতশত দিন
বাংলার ঘরে ঘরে বাজিয়েছ মুক্তির বীণ
ধর্ম, বর্ণ, জাতি করেছ ঐক্যবদ্ধ
বনোদলের বিরুদ্ধে করবে মুক্তিযুদ্ধ।
খান সেনাদের হাতে শেখ মুজিব বন্দি
শেখ ফজিলাতুন্নেছা খুঁজেছ শত ফন্দি
কে করবে জাতির নেতাদের সাথে সন্ধি।
ছিলোনা জীবনের মায়া, ছিলোনা চোখে হায়া
তুমিই ছিলে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের ভায়া।
স্বাধীন করেছ দেশ, মুক্ত করেছ জাতি
প্রতিদানে পেয়েছ বুলেটের মাতামাতি।


যাদের জন্য করে গেলা কষ্ট সারা বেলা
তারাই তোমার মৃত্যু নিয়ে করলো কত খেলা।
জাতি আজ মুক্ত দেশটাও স্বাধীন
মোরাও আর নয় খানসেনাদের অধীন
মোদের ঘরে কত আমেজ ঘর ভরা লোক
এসো-এসো দেখে যাও
শূণ্য হৃদয়, হাহাকার বুক তোমার মেয়ের মুখ
মা-মা বলে ডাকে যদি পায় তাতে সুখ।


হে বঙ্গভ্রাতা
সুখ-সৌখিন জলাঞ্জলি দিয়েছ
তবুও বাঙ্গালীর মুক্তি বরেছ।
স্বাধীন দেশ, মুক্ত জাতি নেই আর ডর
কে জানিত হায়!
নিজের দাঁত জিহ্বা কেটে রক্তে ভরে দিবে ঘর।
হায়! নিয়তির নির্মম পরিহাস
বাংলার বুকে একি গরল ইতিহাস।


যাদের জন্য জন্ম হলো স্বাধীন প্রশাসন
তাদের দিয়েই শুরু করলো প্রথম কুশাসন।
মানুষ মরে দেহ পঁচে মিশে মাটির সাথে
৩৫ বছর পর ঘাতক হাতকড়া পায় হাতে।


হে মেহেদী পাতা
কি আর বলবো তোমার কষ্টের কথা
মৃত্যু আর মৃত্যু তোমার হৃদয়ে গাথা।


বাবা গেল, মা গেল ঐ পরপারে
ভাই গেল, ভাবি গেল সেই পথ ধরে
শুধু তুমিই পড়ে রলা শূণ্য ঘরে।


তোমার বুকে বড় কষ্ট তাইনা পাতা
সবকিছু ঝড়েও ছিলো একটি মাথা
সেটাও নিয়ে নিলো ঐ বিধাতা।


হে মেহেদী পাতা
কি আর বলবো তোমার দুঃখের কথা
কবিতায় লিখে শেষ করা যায় কি ব্যাথা।


হে বাঙ্গালী
যাঁর জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলার জন্ম হতো না
বাংলার আকাশে লাল সবুজের পতাকা উড়তো না
বাংলার বাতাশে বাঁজতোনা-
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।


তিনি আমাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছেন
আমরা কি দিলাম তাকে?


-----রশীদ, রাশেদ, নূর, হুদা, ডালিম
বাঙ্গালীর দল থেকে কেন হলি জালিম,
আজ বাঙ্গালীর বুকে বড় কষ্টের গ্লানি
বাঙ্গালী না হয়ে তোরা হসনি কেন পাকিস্তানি।