ঠিক কত বছর পর তোমার সাথে দেখা,
অনুমান করতে পারবে?
তুমি বললে, প্রায় বছর দশেক তো হবেই।
বললেম,তুমি দেখছি আগের মতই রয়ে গেছো, সরল সিধে বেশ ভূষায়।
নাকের ডগায় চশমাটা আর ছাড়তে পারলে না বুঝি ?
তুমি বললে, চশমা’ই তো আর আমায় ছাড়লো না।
কথার পিঠে কথায় তুমি জানতে চাইলে, দেশে কবে ফিরেছি!
কোথায় থাকছি, কি করছি ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি বললেম, মাস দুয়েক হলো দেশে এসেছি।
এতদিন শহরেই ছিলেম। গতকাল এসেছি গ্রামে।
আমরা পাশাপাশি হাঁটছি,
ছোট বেলার সেই দৌড়ে ছোটা মেঠো পথ ধরে।
আমি বটগাছটার তলায় দাড়িয়ে পরলাম।
মনে আছে বটগাছটা? বৃষ্টি নামলেই
সবাই এসে জড়ো সরো হতাম এখানে।
অনেক দিন পেড়িয়ে গেছে! তাই না?
তুমি শান্ত স্বরে সায় দিলে, হুম! অনেক দিন।
জানতে চাইলাম, তুমি কি করছো? চাচা কেমন আছেন?
তুমি বললে, আমি গফরগাঁও প্রাথমিকে পড়াই আর
বাবা তো গত দুই বছর ধরে হাড়ের অসুখে বিছানায়।
আমরা হাঁটতে হাঁটতে প্রায় সৈয়দ বাড়ির আম বাগানের কাছে।
আমি কঁপালে হাত দিতেই, তুমি শব্দ করে হেসে ফেললে।
মনে আছে তাহলে?
তুমি বললে, থাকবে না আবার। লাটিম খেলা নিয়ে সেকি ঝগড়া।
এক পর্যায়ে নান্টু তোমার কঁপাল ফাটিয়ে দিলো লাটিম ছুড়ে।
আর তুমি কোথা হতে ছুটে এসে কতগুলো লতাপাতা চিবিয়ে দিলে আমার কঁপালে।
আচ্ছা! তুমি কিন্তু ওই দিনই আমার সাথে প্রথম কথা বলেছিলে।
তুমি আড়ালে থাকতে কেন ?
তুমি বললে, আমি জানতাম যাদের বাবার সরকারী চাকুরী,
তারা খুব হিংসুটে হয়।
ও তাই বুঝি?
তুমি একটু লজ্জা পেলে!
হাঁটতে হাঁটতে এবার আমরা কল্পের শেষ প্রান্তে।
রাত প্রায় তিনটে।
খুব ঘুম ঝেঁকে আসছে আমার, বাকী কথা না হয়
অন্য কোন নিঃসঙ্গ রাতে হবে!
তুমি তো আমার কল্পে বন্দি, চাইলেই পাবো।
সশরীরে না হয় তোমার দেখা নেই বহু বছর!
তবুও কল্প রাজ্যে আমি শুধু তোমায়’ই দেখি।