ওগো নীল নদ নীল দরিয়া
শত শতাব্দী পিছনে জানিনা দাঁড়ায়ে কখন!
আবাবিল পাখীর ক্ষিপ্রতায় পিরামিডের দেশে
মুগ্ধ নয়নে তোমার তীরে দাঁড়ায়ে এখন।
হায়ারোগ্লিফিকস হয়ত আজো আছে
পাথুরে দেয়ালের ভাঁজে ইতিহাসের ক্যানভাসে
মমিতে ঘুমায়ে আছে কালের বীরেরা
যাদের পরিচয় তুমি বয়েছ যুগে যুগে!
আমি যেন আজো দেখি-
চলেছে মূসা তার অনুসারীদের লয়ে
ফেরাউন ধেয়ে আসে ঐ লু হাওয়া বয়ে।
সামনে বিশাল নীল নদ তুমি হে-
অস্থির বনী-ঈসরাইল, নির্লিপ্ত মূসা
খোদার আদেশে লাঠির আঘাতে তুমি হলে চৌচির!
সারা দুনিয়া অবাক তাকিয়ে রয়
নীল নদের বুকে বারোটি রাস্তা হয়।
খোদার লীলা কে বুঝিতে পারে?
নীল নদ, বুঝতাম আমি তোমার জল হলে!
চলে গেছে মূসা এসেছে ফেরাউন
চোখের কোটরে আগুন ঝরিছে, ঠোটে খেলিছে শকুন!
ওরে পাপি ওরে বেহুশ দিল
বুঝলিনা খোদার লীলা হলি সমাধী সলিল!
তারপর ওগো নীলকান্ত মণি নীল নদ
শত শতাব্দী পর কান পেতে শোনি
ওমরের কাছে চিঠি এসেছে তুমি ওগো অভিমানী
লুকায়েছ কোন বেদনায় তোমার সে জলখানি।
আমিরুল মুমিনীন-
ধূলার তক্ষতে বসে শাসন করেছে অর্ধ যমীন!
ফোরাতের তীরে না খেয়ে মরে যদিগো কুকুর
কি জবাব দেব খোদা সেদিন রোজ হাশর!
যাহার শাসনে বাঘে মহিষে জল খেত এক ঘাটে,
তাহার যমানায় পানি নেই নীলের বুকেতে।
গর্জে উঠিছে আধেক জাহানের আমীর,
এত সাহস হল কেমনে এ তুচ্ছ নদীর!
দোয়াতের কালিতে ডুবিছে পালক,
হে নীল নদ- তোমার তরে এ চিঠি দিয়েছে ওমর।
চিঠি পাওয়ার পরে আর করোনাক দেরী
প্রজার কষ্ট বিঁধেছে আমার বক্ষ ভেদী।
ওমরে খেলাফতে তোমার লুকোচুরী খবরদার
পানিতে ভরে উঠ দু কূল ভরি!
তামাশা দেখিতে ভিরেছে তীরে খৃষ্টের দল
ওমরের চিঠিতে নীলে নাকি আসবে জল!
জানিনা সেদিন ফেরেশতারা এসেছিল কিনা?
খোদার আরশ কেঁপে উঠেছিল কিনা?
সময়ের কাটা থমকে দাঁড়িয়েছিলকিনা?
মহাকালের বিস্ময়ের ঘোর কেটেছিল কিনা?
ওমরের চিঠি পেয়ে নীল নদ তুমি হে
প্রমাণ করেছে মানুষের চেয়ে মহিয়ান
আর কিছু নাই খোদার সৃষ্ট জগতে।