আমার বাড়ি নদীর চরে, স্থায়ী বাড়ি নাই,
অতি বৃষ্টি বন্যা হলে, বানে ভেসে যাই।
খুঁজে ফিরি নতুন চর, যেদিক দিয়ে জাগে,
মাথা গোঁজার ঠাঁই করি, ঘর বানাই আগে।
নদীর চরে বাদাম লাগাই, মাছ ধরি জলে,
চরে হয় শাক সবজি, অনেক ভালো ফলে।

বছর ধরে আয় রোজগার, কিছুটা জমা রাখি,
চরের জীবন সয়ে গেছে, স্বাধীন ভাবেই থাকি।
দূর থেকে সবাই ভাবে, কেমন করে থাকে,
নিখিল ধরার সৃষ্টিকর্তা, যখন যেমন রাখে।
আমারও আছে প্রতিবেশি, তারাও আমার সাথী,
হেসে খেলে মিলে মিশে, চলে জীবন বাতি।

চরেও আমার সমাজ আছে, সুখ আনন্দে ভরা,
সারা বছর ভালোই কাটে, শুধু দুর্যোগ ছাড়া ।
স্থায়ী বাড়ি পাড়ে ছিলো, ছিলাম আমার গ্রামে,
মধ্য নদী পানি থৈ থৈ, যেখানে জাহাজ থামে।
মরা নদীর ভরা স্রোতে, এখন নদীর পেটে,
নদী ভাঙ্গন গিলে খেলো, ভাঙ্গন যখন তটে।

এখন আমরা চরের মানুয, চরেই বাড়ি ঘর,
সারা বছর জীবন কাটে, নিয়ে আপন পর।
গড়ে উঠলো কৃষি খামার, কোন অভাব নাই,
চাষাবাদে খেটেখুটে, ভালো ফসল পাই।
বছর ধরে নদীর জলে, তাজা মাছ ধরি,
বড় মাছ ঘরে নেই, ছোট মাছ ছাড়ি।

চরের মাঝে পড়ে থাকি, বড় আশা নেই,
নিজের কাজ নিজে করে, খেয়ে দেয়ে যাই।
সারাটা দিন কাজ করে, রাত কাটে ঘুমে,
সকাল হলেই ডাকাডাকি, সবার নামে নামে।
খেটেখুটেও অনেক শান্তি, চরের মাঝে পাই,
পানির ধারে ঠাণ্ডা হাওয়ায়, খুশিতে গান গাই।