রসে বশে পৃথিবীতে আছি কিছুকাল
তবু কখনও কখনও
একুশ শতকীয় নরকের হাওয়া এসে
দুলিয়ে দিয়ে যায় অধিকৃত গাছের ডাল;
যেন তার আগে আর কোনো শতক ছিলনা,
ছিল না চোখ –নাক- এমন ভুরু,
জ্বরে অনাদি পাখিরা অশান্ত হয়
দু একটি লৌকিক পাতা ঝরে পড়ে,
মঞ্চে তখনও সূত্রধারক ঘোষণায় -
জেলে বসে গ্রামচিও বলে গিয়েছেন -
সিভিল লোকেদের এমন রুচি…



ঘন কালো চুলের রাত শেষ হলে শোনা যায়
ক্ষীণ আজানের গান
স্তিমিত ঘণ্টাধ্বনি – মন্দিরের,
ভোরের ট্রেন মফস্বল ছেড়ে শহরের পথে গেলে
ঘুমন্তপুরী চিরে
গুহার পথে পথে ফিরে যায় শিকারীর দল,
দাঁতে মুখে জিভে তাদের রক্ত লেগে থাকে
মৃত্যুর স্মরণে জাগে অদ্ভূত নীরবতা।


ফ্যাকাসে চরাচর তবু আবার শব্দময় হয়
টুং টাং কাপের নড়ায়
চায়ের দোকানে বিস্কুটে ধোঁয়ায়
নাকে কানে জেগে ওঠে আর একটি বাণিজ্য সকাল
এ অশিষ্ট সভ্যতার জোর ধারাপাত;
গুঞ্জনে কলরবে ফুটপাত মুখর হয়
কাল্পনিক গোলাপ উপত্যকায় জমে বিলাসকলা;
ভেরনা লেনের সারদাবাবুরা
টেল-কেমিস্টমঞ্চে ইজিচেয়ার পেতে বসে
তাদের হাসির খোরাক হয়ে
শুনে শুনে শহুরে স্বপ্নের টানে
হুড়োহুড়ি ক’রে আসে জনগণ
পিছলে পিছলে তারা আঠা-জালে পড়ে, আর নড়তে পারে না
মাছ ভেবে, ঠোঁট ভেবে কারা যেন কেড়ে নেয়
সরলতা-চুম্বন
ডালিম আভার রক্ত-কৃষকের শৈশব-শব-সব
যৌবন-শ্রমিকের হাড়।


লক্ষ লক্ষ প্রতারিত কণ্ঠের আর্তনাদ
কেড়ে নেয় মধ্যবিত্ত ঘুম,
সংবাদে সংবাদে শিরোনাম হলে
অফিসে লেয়ারে বাড়ে হুলুস্থূল
নগরে রিমিক্সে এক ছাও,
হে সভ্য ঐতিহাসিক
দ্যাখো, বদলে বদলে যায় ইতিহাস মুখ।