মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণে। যুগে যুগে নারীর হাতে ঘুরেছে সভ্যতার চাকা। কৃতিত্বের স্বীকৃতি না পেয়ে ও শক্ত হাতে হাল ধরেছে সংস্কৃতি এবং সভ্যতার চাকা। ধাপে ধাপে তারা পাল্টেছে পৃথিবীকে। অচেনা –অজানা সেই সব মহীয়সী নারীকে নিয়ে কিছু কথা।


নারী কবি সাফো। গোলাপ ফুলের প্রথম পরিচয় পাওয়া যায় তার কবিতায়। তাঁর রূপের এবং লেখার প্রশংসা করেছেন স্বয়ং সক্রেটিস। লিপিবদ্ধ কবিতার সন্ধান পাওয়া কবিদের মধ্যে তিনি প্রথম কয়েকজনের মধ্যে একজন।কবি সাফো। কবিতার আঙ্গিনায় এমন এক নারী, যাকে সক্রেটিস সেই সময়কার সেরা 10 জন কবির একজন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।


গ্রিক কবি সাফোইস্লিঅবলে সব সে জন্মগ্রহণ করেন। ইতিহাসে তিনিই প্রথম লেসবিয়ান কবি হিসাবে পরিচিত। তিনি লেসবসে জন্মগ্রহণ করেন, তাই তাঁকে লেসবিয়ান কবি বলা হয়। তবে তাঁকে সমকামীও বলেছেন কিছিু ইতিহাসবিদ। সমকামী প্রেমিকা আত্তিস সম্পর্কেও প্রচলিত আছে কিছু মিথ। সাফোর প্রকৃত জীবন সম্পর্কে কমই জানা যায়। তাঁর  কবিতা বিশ্লেষণ করে তাঁকে বোঝার চেষটা করা হয়েছে। তার অধিকাংশ কবিতা হারিয়ে গেছে। তিনি আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব 620থেকে630 সালের মাঝামাঝি সময়ে জন্মগ্রহণ করেন। ইতিহাসবিদদের মাঝে তাঁর জীবনী নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তা সত্বেও লেসব দ্বীপে তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড এবং সাহিত্যচর্চা আজো কিংবদন্তী। তার কবিতায় তিনি নারী-পুরুষের সম্পর্ক আর প্রকৃতির বর্ণনা করেছেন নিপুণভাবে।


সাফোকে সমকামী বলা ইতিহাসবিদের সংখ্যা কম।অধিকাংশ ইতিহাসবিদ বলেন, সাফো সক্রেটিসের মতো জীবন যাপন করেছেন। সমমনা একদল মানুষ তাকে সকসময় ঘিরে থাকতো। আত্তিসও এদের মধ্যে একজন। তারা মূলত কলা, কবিতা, এবং সংস্কৃতি নিয়ে দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন। ধারণা করা হয় সাফো স্বুলের মতো একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন যা মূলত সমমনা। একদল বন্ধুদের আড্ডার ঢঙে গড়ে উঠেছিল। সাফোর ছিল জীবন ও যৌনতা সম্পর্কে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি তাঁর কবিতার মাধ্যমে জীবন ও যৌনতা সম্পর্কে স্পষ্ট ভাষায় নিজের মতামত প্রকাশ করে গেছেন।তবে সেই সময়কার মানুষ তাঁর এই মতামতকে হাস্যকর ভেবেছেন। অনেকে তাঁকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেও উপহাস করতেন। তবে এই নারী কবি এবং তাঁর কবিতা যুগেযুগে কবিদের শিখিয়েছে নিজের চিন্তাকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরতে। মহীয়সী এই নারী খ্রিষ্টপূর্ব 570 সালে মৃত্যুবরণ করেন।