শোনো, জলো-জীবনের সুখীজন ...


ঝাঁপ দিও না শান্ত জলে,
তার গভীরতায় মরে বেঁচে থাকে সে-ই ...
জল যারে চায়।


স্রোতহীন জল শুষে নেয় তার
অন্তহীন আক্ষেপের তরঙ্গ,
সহস্র নির্ঘুম বিভাবরীর আত্মকথন,
তন্দ্রালু আঁখিতে সিলিং-এ দেখা
ঝাপসা প্রশ্ন, কূটাভাসী উত্তর ...
এরপর কোনো নিশিত বিভ্রমে মোড়ানো কিরীটে বসে
ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত-পরাজিত আবেগে বা শঙ্কায়
জাতিসংঘ-রঙে বিশ্লেষণ ...
কূটনৈতিক ঢঙে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন  ...
সাহায্য-সংস্হার রীতিসিদ্ধ আশ্বাস ...
নির্বাচনী প্রচারণার বিশ্বাস।


অতঃপর সাঁজোয়া আপোষের ঘুম,
জৈবিক অবসাদের ইতি,
আর
আরেকটি বিভ্রান্ত দিবসের জন্য
নির্জল, ঊষর, বিস্বাদ, অমিত্র প্রতীক্ষা  ...
জলো-জীবনান্তের অপেক্ষা,
ডুবে মরে বাঁচার অবিরাম প্রত্যাশা ...


শোনো, জলো-জীবনের সুখীজন ...


ঝাঁপ দিও না সেই জলে,
তার পৃষ্ঠ ছুঁয়ে খেলো ...
ঢেউলুপ্ত সেই জলের পৃষ্ঠস্পর্শ
তোমাদের শত জনমের সৌভাগ্য,
তার গভীর নেই তোমাদের পাওনাপত্রে।


জীবনের জল চেটে চুষে ভিজেছো অনেক ...
স্রোতের মতো ছুঁয়ে ভ্রষ্ট করেছো তীর,
সমুদ্দুরের সাথে মিলনের অবিনাশী তাড়নায়
আবেগ নিয়ে খেলেছো ঢের।


তাই অতলের চোরাস্রোতে শ্বসনের জন্যে নেই তোমাদের
জমাট বিষাদে উপচানো ফুসফুস,
কৃষ্ণ গহনের সৌষ্ঠব দেখার জন্যে নেই তোমাদের
অযুত রজনীর ঘুমহীন অপলক বেড়াল-দৃষ্টি  ...


শান্ত জলের নিগূঢ় আলিঙ্গন তোমাদের জন্যে না,
শুধু তার জন্যে ...
শুখা জনমের কণ্টকসুধা পিয়ে
আবেগের কাঠফাটা রোদে দগ্ধ ফণি-মনসার মতো
আজন্ম অভিপ্রায়ে
জীবনান্তে সলিল-সহবাসের আর্দ্র স্বপ্ন যে দেখে ....


শুধু তার জন্যে  ...
জল যারে চায়।