প্রথমেই দর্শনের বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করা যাক। দর্শন অর্থাৎ philosophy হলো জ্ঞানের অন্যতম প্রাচীন একটি শাখা। philosophy শব্দটি এসেছে প্রাচীন গ্রিক ভাষা থেকে। গ্রিক ভাষায় দুটি শব্দ ‘ফিলোস’ (বন্ধু, ভালবাসার পাত্র) ও ‘সোফিয়া’ (প্রজ্ঞা) থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। তাই, বলা যায় দর্শনের সাথে মূল সম্পর্ক হচ্ছে প্রজ্ঞার, আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, প্রজ্ঞার প্রতি ভালোবাসাই দর্শনের মূল উপাদান ও অপরিহার্য অংশ। একজন দার্শনিক কেবল তথ্যগত জ্ঞানের উপর নির্ভর করেন না, বরং প্রজ্ঞাই দর্শনের প্রধান কাঙ্ক্ষিত বিষয়। প্রজ্ঞার অনুসন্ধান ও চর্চার মাধ্যমেই দর্শন বিকাশ লাভ করে। দার্শনিক আপেক্ষিক বস্তুগত জাগতিক বিষয় বা যৌক্তিক শাস্ত্রসম্মত নন বরং আত্ম প্রজ্ঞায় প্রতিভাত হন। এজন্য দার্শনিককে সমাজে অনেক বিদগ্ধ হতে হয়। দাশনিক পার্থিব সংসারে পাগল উপাধিতে ভুষিত হন, অথচ দর্শনের জন্য যে প্রজ্ঞা কাম্য, তা অন্তর্দৃষ্টি, দৃষ্টিভঙ্গির অভ্রান্ততা, বিচারের ভারসাম্য ও বিশ্লেষণের সামঞ্জস্যতার মধ্যে রয়েছে।


ভুল এবং সঠিক কাজের (বা মূল্যবোধের বা প্রতিষ্ঠানের) মধ্যে আসলেই কি কোন বাস্তব/নীতিগত পার্থক্য আছে? যদি থাকে, সে পার্থক্যটা কি? কোন কাজটা ভালো আর কোনটা মন্দ? স্বর্গীয় নির্দেশ কি সঠিক কাজকে সঠিক বানায়, অথবা এর বাইরে অন্য কিছু কি আছে যার উপর ন্যায় অন্যায় নির্ভরশীল? সুনির্দিষ্ট ন্যায়ের কি কোন মানদণ্ড আছে, নাকি এরকম সকল মানদণ্ড সংশ্লিষ্ট নির্দিষ্ট সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত? কিভাবে জীবন নির্বাহ করা উচিত? সুখ কি? জ্ঞানের প্রকৃতি ও সীমাবদ্ধতাগুলো কি? কোনটি মানব অস্তিত্বের ভিত্তি হিসেবে অধিক মৌলিক, জানা (জ্ঞানতত্ত্ব) নাকি অবস্থান করা (বস্তুগত অধিবিদ্যা)? আমরা যা জানি তা কিভাবে জানতে পারলাম? জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা কি? আমরা কিভাবে জানতে পারব যে আশেপাশে আরও মনোজগত আছে (যদি আমরা পারি)? কিভাবে আমরা জানতে পারব যে দৃশ্যমান জগতের বাইরেও একটি জগত আছে (যদি আমরা পারি)? কিভাবে আমরা আমাদের উত্তরকে প্রমাণ করব? সত্য স্বীকারোক্তি কি? প্রকৃত ও যৌক্তিক জ্ঞান বলতে কোন জিনিসটিকে বোঝায়? কারণ প্রদর্শনের সঠিক নীতিগুলো কি কি? ভালো বিতর্ক কি? জটিল বিতর্ক নিয়ে আমরা কিভাবে চুলচেরা বিশ্লেষণ করব? ভালো চিন্তায় কি লাভ হয়? কিভাবে আমি কোন কিছুকে অপ্রয়োজনীয় বলতে পারব? যুক্তির মূল উৎস কি বা এর উৎপত্তি কোথা থেকে হয়? কোন ধরনের বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে? তাদের প্রকৃতি কি? কিছু জিনিস কি আসলেই আছে নাকি সেগুলো মতিভ্রম? শূন্যতা ও সময়ের বৈশিষ্ট্য কি? মন এবং শরীরের সম্পর্ক কি? ব্যক্তিত্ব কি? সচেতনতা কি? ঈশ্বর কি আছেন নাকি নেই?


উপরিউক্ত বিষয়গুলো সব আপেক্ষিক। দর্শনও একটি আপেক্ষিক ব্যাপার। দর্শন সর্বদা সেসব মৌলিকতম প্রশ্নে বিচরণ করে বেড়ায় যেগুলোর ব্যাপারে মানব জাতি জানার আগ্রহ প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। দর্শনের মাধ্যমে মানুষ তার অর্জিত জ্ঞান, প্রজ্ঞা, চিন্তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয় তার সন্তানদের নিজের অভিজ্ঞতা শিখিয়ে দিয়ে যায়, দর্শন মানুষের স্বীয় বা আত্ম প্রজ্ঞার মতধারা যা কোন বাঁধাধরা নিয়ম বা প্রকৃতির অনুশাসনের অধীন নয়। দর্শন মুক্ত চিন্তা চেতনা ও প্রজ্ঞার মূলমন্ত্র। অর্থাৎ দর্শন হচ্ছে আত্ম বিবেচিত চিন্তাভাবনা, ধারণা, কল্পনা, মনমত ভাব, ধ্যান, যুক্তির বিবেচনা ও অভিব্যক্তি।


মহাজ্ঞানী সক্রেটিসের সরাসরি শিষ্য প্লেটো অলঙ্কারশাস্ত্র (rhetoric) ও কাব্য (poetry)-কে খুব কাছাকাছি এনে বলেছেন যে, কাব্য হলো এক ধরনের অলঙ্কারশাস্ত্র (poetry is a kind of rhetoric)। তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘Republic’-এ বলেছেন, “there is a old quarrel between philosophy and poetry”। আসলে প্লেটো কবি ও কবিতা সম্পর্কে প্রাচীন গ্রীক সমাজের মানুষের অন্ধ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এ প্রেক্ষিতে তৎকালীন গ্রিক কবিদের সম্পর্কে একটু আলোচনা করা দরকার। গ্রিক শব্দ এনথুজ যা হতে ইংরেজি এনথুজিয়াম-এর উদ্ভব – এর অর্থ হলো দেবতায় পাওয়া। যেমন বলা হয় তার উপর ভূতে ভর করেছে বা অপদেবতা ভর করেছে। গ্রীকদের ভ্রান্ত বিশ্বাস ছিল যে বিশেষ বিশেষ মানুষের উপরে দেবতারা ভর করে। তখন তারা আর নিজেদের অধীনে থাকে না। দেবতা পাওয়া ঐসব মানুষদের বর্ণিত পঙক্তিমালাকে তারা ঈশ্বরের বাণী মনে করত। তারা বাস্তবতা বর্জিত উদ্ভট কথা বললেও সাধারণ মানুষ তা বিশ্বাস করত। কবিদের বাণীকে অবিশ্বাস করাকে তারা পাপ মনে করতো। এ কারণে সঙ্গীত বা সাহিত্যের পাঠ্য বিষয়ে হোমার, হিসিয়ড প্রমুখ মহাকবিদের কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হতো। কিন্তু প্লেটো কবিদের শিক্ষা বা বাণীকে নির্বিচারে গ্রহণ করার পক্ষে ছিলেন না।’ গ্রিক কাব্য সংকলনে তার লেখা কিছু কিছু টুকরো কবিতা পাওয়া যায়। এতে নিঃসন্দেহে বলা যায় তিনি নিজেও একজন কবি ছিলেন, কবিতা বিদ্বেষী ছিলেন না। আসলে তিনি কবি ও কবিতার নামে ভণ্ডামীর বিরোধিতা করেছেন। কারণ, কোন যুগেই আদর্শ সমাজ গঠন সচেতন ও সুসভ্য জনশক্তি ছাড়া সম্ভব নয়। এ কথা কবিদেরও মনে রাখতে হবে। কবিরা তাদের তীব্র অনুভূতি শক্তি দিয়ে সমাজকে দেখবেন। তীক্ষ্ণ মেধা দিয়ে প্রকৃতি, সমাজ, সমাজের মানুষের জীবনাচরণ পর্যবেক্ষণ করবেন, তারপরই কবিতার ছন্দে তা লিপিবদ্ধ করবেন। যাদের এমন মহান ও কঠিন দায়িত্ব তারা যদি হন অর্ধ উন্মাদ, মাতাল, বেখেয়ালি তা হলে গোটা সমাজ ব্যবস্থায় এর বিরূপ প্রভাব পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। এই বিরূপ প্রভাব হতে দেশ ও সমাজকে বাঁচাতে বাস্তব সম্মত কবিতার চর্চা বৃদ্ধির জন্যই প্লেটো ঐসব অর্ধ উন্মাদ কবিদের নির্বাসন কামনা করেছেন। আধুনিককালেও অনেকে মনে করেন বাস্তব জ্ঞান বর্জিত, আধা পাগল হওয়া কবিদের বৈশিষ্ট্য। আরও এক ধাপ এগিয়ে বলতে চান মদ, গাঁজা, ভাং না খেলে সে আবার কিসের কবি? প্লেটো এই চরিত্রের কবিদেরই নির্বাসন কামনা করেছেন- তার আদর্শ রাষ্ট্র হতে।


অপরদিকে, প্লেটোর গুরু সক্রেটিস, কবিরা জ্ঞানী কিনা এ অনুসন্ধান করতে তিনি কবিদের কাছে যান এবং তাদের কবিতার কিছু অনুচ্ছেদের সঠিক অর্থ ব্যাখ্যা করতে বলেন। কিন্তু, কবিরা তাদের কবিতার সঠিক অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারেনি। সক্রেটিস বলেন, "তখন আমি বুঝতে পারলাম কবিগণ জ্ঞান দ্বারা কবিতা লেখেন না, বরং এক ধরনের সৃজনী ক্ষমতা ও অনুপ্রেরণার দ্বারাই কবিতা লেখেন।"


প্রকৃতপক্ষে, আবেগ নিয়ে অনুভূতি চর্চা করা হলো কবির কাজ, আর দার্শনিকের কাজ হলো চিন্তা ও যুক্তি নিয়ে। এ দুজনই তাদের নিজ নিজ কাজের জন্য একটি সাধারণ মাধ্যম হিসাবে ভাষাকে বেছে নেন। এই ভাষা ব্যবহারের ফলে একজন কবি শিল্পী হয়েও কবি, চিত্রকর নন এবং একজন দর্শন চর্চাকারী দার্শনিক হিসাবে বিবেচিত, স্থপতি নন। স্থপতি তার কর্মের মাঝে তার দর্শনকে লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু দার্শনিক তা প্রচার করেন লিখে বা বক্তৃতার মাধ্যমে। ভাষাটা শুধুই একটি মাধ্যম, কবিতা বা দর্শনের উপকরণ নয়। চিত্রকর বা স্থপতির মত কবি এবং দার্শনিকেরাও বিচিত্র সব উপকরণ নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং করেন। সাধারণত, যে জিনিষটা মানুষের আবেগ ও অনুভূতিকে সবচেয়ে বেশী নাড়া দেয় তা হচ্ছে প্রেম, আর তাই বেশীর ভাগ কবি প্রেমকে তাদের কবিতার উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করেন। অনুরূপভাবে, জীবন ও জগতের মৌল চরিত্র মানুষের চিন্তাকে বেশী উদ্দীপ্ত করে বলে মেটাফিজিক্স বা অধিবিদ্যাই দর্শনের মুখ্য আলোচ্য বিষয় বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু কবি বা দার্শনিক কেউ তাদের কাজের পরিধি এ দুটো বিষয়েই সীমাবদ্ধ রাখেননি বা রাখতে পারেননি। কবিতা বা দর্শনের উপজীব্য হিসাবে তাই বিচিত্র সব জিনিষের সমাহার দেখা যায়। অবস্থাটা এমন যে দার্শনিক এবং কবি উভয়ই তাদের দর্শন এবং কবিতার মাধ্যম যে ভাষা তাকেও তাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের কর্মের উপজীব্য হিসাবে নিয়েছেন। আমাদের বাংলা ভাষার প্রশস্তিতে লেখা কবিতার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। বিষয় নির্বাচনে দার্শনিক ও কবির এই ব্যাপক স্বাধীনতা সত্ত্বেও তাদের মধ্যেকার পার্থক্য কিন্তু মুছে যায় না। যে কোন অবস্থায়ই একজন কবি, কবিই এবং দার্শনিক, দার্শনিকই। প্রশ্ন উঠতে পারে, তবে-যে কবি-দার্শনিক এবং দার্শনিক-কবির যে ধারনা রয়েছে তা কি অলীক? সত্যের খাতিরে বলতে হবে আসলে ব্যাপারটা তাই-ই, তবে একটি বিশেষ অর্থে এ ধরনের অভিধা অর্থপূর্ণ আর তা হচ্ছে একজন কবি যখন দার্শনিকের মূল বিষয়ে অর্থাৎ জগত ও জীবনের মূল প্রশ্ন সম্পর্কে কবিতায় তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আমরা তখন তাকে দার্শনিক কবি বলি, আর একজন দার্শনিক যখন কবির মূল বিষয়ে, যেমন প্রেমের ব্যাপারে কিছু বলেন তখন তাকে আমরা কবি দার্শনিক বলতে পারি। এই সীমিত অর্থেই জগতের বড় বড় কবিরা দার্শনিক কবি বলে পরিচিতি পেয়েছেন।


কবি ও কবিতার বিচার একভাবে না করাই শ্রেয়। তবুও কবিতার মধ্যে কবিকে কিংবা কবির মধ্যে কবিতাকে তালাশ করার একটা রেওয়াজ প্রচলিত রয়েছে । কবিত্ব ছাড়াও একজন কবি ব্যক্তিত্বের বহু বিচিত্র দিক থাকতে পারে। মানুষের অন্যান্য বৃত্তির মতোই কবিতাও একটি অনুষঙ্গ। কবিরা জগতকে জানা বা বোঝার সাধনা করে না, জগতে নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করা হলো কবির কাজ। তাই অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, দর্শন ও সামাজিক চিন্তাচেতনার বিকাশের পথ ধরেই কবিতার ইতিহাস গড়ে ওঠে। কবিরা সমাজ ও রাজনীতির উর্ধ্বে নয়, তাই কবিতায় সমাজ, রাজনীতি, দর্শন, পরিবেশ, প্রতিবেশ সবকিছুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় । চারপাশে যেসব দৃশ্য দেখা যায়, চক্ষুষ্মান সকলেই সেসব দেখে থাকে, কিন্তু কারো কারো মতে দেখতে পাওয়া বিষয়ের হুবহু বর্ণনা লিখলে কবিতা হয় না। সেই দৃশ্য আদৌ কেন আছে, কী কারণে বিশ্বে তার থাকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, বিশ্বের নিয়মাবলী ও গঠন প্রকৃতি ওই দৃশ্যে কতটুকু প্রকাশিত হয়েছে সেইসব বর্ণনার সাথে যুক্ত না করলে আধুনিক কবিতা হয়ে ওঠে না। কবিতা হলো জীবনের নানারকম সমস্যার উদ্ঘাটন, কিন্তু উদ্ঘাটন দার্শনিকের মতো নয়, যা উদ্ঘাটিত হলো তা যেকোনো জঠর থেকেই হোক না কেন, তা আসবে সৌন্দর্যের রূপে, যা কল্পনাকে তৃপ্তি দেবে।


কবিতা ও দর্শনের সম্পর্ক বিষয়ে দর্শনের প্রফেসর জর্জ বোয়াস (জন হপকিনস ইউনিভারসিটি) বলেন, কবিতায় যে চিন্তা বা দর্শন মেলে অধিকাংশ সময়ই তা অত্যন্ত পচা ও ভুল, ষোলো বছরের বেশি বয়স্ক কেউ কবিতায় কী বলা হচ্ছে তার জন্য কবিতা পড়ে না। এলিয়ট বলেছেন, দান্তে বা শেক্সপিয়র কেউ প্রকৃত অর্থে যাকে চিন্তা বলে, তেমন চিন্তা করেননি। ডঃ হুমায়ুন আজাদ বলেন, রবীন্দ্রনাথের কবিতায় দর্শন খুঁজলে কী পাই? তাঁর ভালো কবিতাগুলোতে দর্শন পাই না, সেগুলো স্বাভাবিকভাবেই এত ভালো যে দর্শনের কোনো দরকার পড়ে না সেগুলোর, তাঁর খারাপ কবিতাগুলোতে পাই তথাকথিত দর্শন। জন কীটসের পঙ্ক্তিতে যতটা আছে দর্শন তার চেয়ে বেশি রয়েছে সৌন্দর্য।


যাহোক, দর্শনের উপস্থিতি কবিতায় একেবারে প্রত্যক্ষ না হলেও আভাস থাকতে পারে। তবে, কবিতা থেকে সৌন্দর্যের রস আস্বাদন করতে হবে, দর্শনটুকু নয়। আমরা কবিতা পড়বো কবিতার উদ্দেশ্যে সৌন্দর্যের জন্য, দর্শনের উপস্থিতির জন্য মোটেও নয়। কেননা কবিতায় যেটুকু দর্শন থাকে, সেই অংশ বা দর্শনকেও কবিতা হতে হবে। কারণ, কবিতা থাকে কবিতার মধ্যে, অন্য কিছুর মধ্যে নয়, কবিতার সংজ্ঞা কবিতাই।