চোখে আমার মৌলিক স্বপ্ন
তবু দৃষ্টি আটকে থাকে মানুষের মিছিলে;
অবিশ্বাস্য আশায় মানবিক মুখ খুঁজে ফিরে-
কিছুদূর হেঁটে দ্বিধার দাপটে উদ্দেশ্য ভুলে যাই
অকপটে কণ্ঠ মিলাই প্রথাগত ভাষায়;
খানিক আকাশে উড়ে তাই মাটিতেই ঘুরিফিরি ।


তবু মূর্খের উচ্ছ্বাসে আর পদকের জলোচ্ছ্বাসে মৃত্যু দেখি
অর্জিত বিশ্বাসে থেমে যেতে বাধ্য হই মাঝ পথে
সহসা যুক্তির নামে আঁকড়ে ধরি মৃতের মত মৌলিকতা;
আমি ভোরের সূর্য হয়ে গোধূলির ছায়া ভুলতে পারি নি কোনদিন
আমি ফুলের সৌরভে মূলের নিরন্তর কান্নার ধ্বনি শুনি;
পাঁচ টাকার করতলে পাঁচ সহস্র কদর্যতা দেখে -
একদা জীবনের ঋণ শোধ করতে চেয়েছি বিশুদ্ধ বেদনা মেখে,
অর্থের সবুজ পাতায় তাই এখন শীতের বৈরী হাওয়া;
প্রয়োজন আজকাল বড় বেশি পরিহাস করে –
সৌন্দর্যের গভীরতাকে মনে হয় মূর্খের গৌরব;
বাস্তবিক আমি হতে পারি নি স্বপ্নের কিংবা স্বার্থের ।
প্রিয়ার চোখের দিকে বহু শতাব্দী তাকিয়ে থেকেছি
পুনর্বার একলা হয়েছি জীবনের অনন্ত প্রয়োজনে;
বিষণ্ণ দন্দের সাথে আমার কী এক নিদারুণ বসবাস !


অবশেষে আমি নিঃস্পৃহতার অন্য ভুবনে একা  
যেখানে আলো আধারির সংঘাত নেই – নেই মানুষের চলাচল
যেভাবে বৃদ্ধের মুখোশে যৌবন খুঁজে শিশুর সরলতা-
সেভাবে স্বপ্নের খোঁজে নেই শিল্পের কানামাছি খেলা  
সারাবেলা শুধু আমার নিসর্গের সাথে চুপিসারে কথা বলা
প্রবাহিত জল যেন সূর্য মেঘের চক্রাকারে-
রাতের অন্ধকারে ঘাসের শিশির হয়ে নিসচুপ টলমল !
আমি স্রষ্টার নিখুঁত মহাবিশ্বে বিক্ষিপ্ত উল্কাপিণ্ডের মত অবাধ্য এক সৃষ্টি
যেখানে দুঃখ-সুখের বাইরে নিজেকে ভাঙতেই ভাল লাগে বেশি ।
নিঃস্পৃহতাকে স্বর্গ মনে হয় মাঝে মাঝে
জননীর গর্ভেই তো জন্মের শ্রেষ্ঠ উচ্ছ্বাস - এমনি আমার নিভৃতে বসবাস ।


নিঃস্পৃহতার অতল তবু সীমাবদ্ধতার বাতাসে প্রায়শই কাঁপে ;
আমি প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির অসম্ভবে বিশ্বাসী নই
তবু নিশ্চুপ সন্যাসীর সত্য স্বপ্নের মত নিত্য আপ্লুত হই -
কিছু সত্যিকারের চোখ সত্ত্বার চেয়ে সত্য মনে হয়
আমি প্রায়শই ভেসে যাই বিশুদ্ধ কান্নায় - কৃতজ্ঞতায়
কী এক অদম্য আশায় আবারো ফিরে যেতে ইচ্ছে করে
                                                   মানুশের মিছিলে ।


................................................ মাহবুব শাকী