সারা রাত যুদ্ধ শেষে আসে এক কোঁকড়ানো ভোর-- কাঁধে নিয়ে
শুধু এক ফোঁটা সুখ, বিধ্বস্ত জমিনে জেঁকে বসে তার ছবি
ক্রমাগত দূর থেকে দূরে-- বহুদূরে আরো শতেক জমিনে;
সমস্ত শরীর থাকে শুকনো পাতার মতো পিপাসার্ত মুখ।
বেদানার দানার মতন বিন্দু বিন্দু করে জমে জন্ম নেয়
বেদনার এক আস্ত ঘানিক হৃদয়। বাকি দিনমান জুড়ে
ওপারের ঘেসো ক্ষেতে আকাশ যখন থাকে মেতে দুর্বিনীত
আরো- অন্য কারো সাথে, তখন প্রেমের সঙ্গদোষে খোয়া যায়
তৃণ নির্জনতা। দ্বিতীয়ার চাঁদের মতন অধরে পড়ে না
কোনো টোকা আঙ্গুলের, মহুয়া চোখের পাতে চুমু ঝরে না যে
উন্মত্ত-অধীর সুখে। এ বেলায় শুধু চোখে ভেসে ওঠে তার
উদ্বন্ধনের বন্ধনে ঝুলে থাকা স্বস্তি এত বছরের পর;
আর বিষাদের কারখানা তখন কে যেন করে উদ্বোধন
হৃদয়-নগরে। সেই সময় আগুনঠুঁটো এক পাখি আসে
নরকের মতো নিদারুণ ভালবেসে; আর পাখায় না তুলে
সমস্ত হৃদয় তার ঠোকরায় ঠোঁটে ধরে, আর ফেলে আসে
আজীবন না দেখার চৌচির শ্মশানে- শেষ বারের মতন
পুড়ে পুড়ে শেষ তক ভস্মাধার আরো ঋদ্ধ করতেই যেন;
অথচ তার মনের উঠোনে কত না দিন সে যে উঁকি দিয়ে
গেছে, কতই না মেতেছে নিংড়ানো সুখে, কতবার গেছে একা
ফেলে- ভোরের শিউলি ঝরিয়ে আপন মনে শুধু গন্ধটুকু
নিয়ে- নিখোঁজ নির্দয় বনানী-প্রান্তরে বুনো সুখের সন্ধানে।