সেদিন সন্ধ্যা বেলা সবে দিয়েছি চুমুক চায়ের পেয়ালায়  
হাতে এক দৈনিক খবরের কাগজ পড়তে যাবো রোজের খবর ।
বর্ষার শুরু, প্রবল বর্ষণ চমকে ওঠা বিদ্যুতের স্বন  
যেন আজ হবে সৃষ্টির নির্বাণ ।
তখনই বেজে উঠলো সম্মুখ দ্বারের ঘণ্টা দেখি এক অজানা আগন্তুক
চিনি না তাকে কোনদিন, মনেও পরে না ক্ষনিক ।
কে আপনি ?


বসুন আপনি , চিনতে পারলাম না  আপনার আনন
কথা থেকে আসছেন, নাম কি ? আমার সাথে কি প্রয়োজন ?
আমি কি কোন সাহায্য করতে পারি ?
নির্লিপ্ত, ক্লান্ত , ভাবলেশহীন, কত না বিনিদ্র রজনী অতীতবার ।


আমি শ্রাবণী এসেছি পাশের গঞ্জও থেকে বড় বিপদে পড়ে
ঘরে নাই অর্ধাঙ্গ ,শিশু দুখানি অভুক্ত গত দুই দিন ধরে।
যা কিছু ছিল সব শেষ ,তাই এলাম একটু ধান চাই
শুনেছি আপনি দয়াবান, সজ্জন যদি এক মুট ধান পাই ।


অর্ধাঙ্গ ঘরে নাই গেছে মাঝ দরিয়ায়ে ফেরে নাই এখনোও
কর্তব্যর জটিলতা তো আছেই ,তবু করতে হবে পরিতৃপ্ত ।
ফিরে গেল শ্রাবণী হল তার শঙ্কার অবকাশ
সুখী থাক এটাই ছিল আমার অভিলাষ ।


কেটে গেছে আরও ত্রিপ্রহর দেখি নি শ্রাবণীকে কি হল তার হাল ?
খবর নিলাম পাশের গঞ্জ থেকে,ফেরে নই বহুতরী মাঝ দরিয়া থেকে
শ্রাবণীর আজ অর্ধাঙ্গ নেই,শুধু আছে কিছু মধুর সৃতি বিজরিত  কাল
ফিরে এলেন তিনি আরও চারদিন বাদে হাতে সেই এক মুটও চাল


চোখ ছলছল, কম্পিত হাতে, শ্রাবণী বলল এলাম তোমার দান ফেরত দিতে
এবার আমার অশ্রু বাহির হল, বললাম হে ঈশ্বর তুমি কি পারো না এ ক্লেশ নিতে।
নিলাম না শ্রাবণী থেকে কিছু বললাম তোমার ঘরের অন্ন আজ আমার থেকে
শ্রাবণী বলল আমার গেছে সব হারিয়ে প্রভু ,চাই না কিছু আর তোমার থেকে।


শুধু চাই একটু শান্তি মনে,শিশু দুটি যে করতে হবে বয়ঃপ্রাপ্ত
কর্ম যজ্ঞে নামতে হবে নিজেকে ,অর্ধাঙ্গ আছে সব সময় নিকটস্থ ।
শ্রাবণী তুমি আজ আর নাই আমার আগন্তুক
তুমি যে আমার মা তুমি সকলের দেবী পরম আরাধ্য রক্ষক ।


শ্রী সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
কলিকাতা
৯৮৩১৮৪০১৯৬


http://sanjukolm.blogspot.in/2013/08/blog-post_36.html?spref=fb