কি দিয়ে বরণ করি বলতো তোমায় –
আকাশে বৃষ্টি নেই –
ঘরে নেই চাল ডাল ,
ছেঁড়া শাড়ির খুট দিয়ে মুছেছি পিড়ি খানা –
এইখানে তুমি বোসো ।
আমার ঘরে সব পুরাতন , মলিন
শুধু তুমি ছাড়া ।
তালপাতার ছেঁড়া পাখা নাড়ায় যতটুকু বাতাস আসে –
তার থেকে বেশি কি আর দেব তোমায় ।
এক কলসি জল এনেছি অনেক দুরের গ্রাম থেকে –
পথিকের তরে রেখেছি উঠানে –
এই পথে যদি কেউ জল চায়
তাকে কি করে ফেরাব বল জল নেই বলে তপ্ত দুপুরে ।
ফেন ভাতের সাথে দুটি বেসন লেপা কুমড়োফুল ভাজা
থালার পাশে –বছরের প্রথম দিনে
যদি দিতে  পারি  –
অনেক দিনের পরে –অভাবের ঘরে
আজ খেয়ে নাও সুখে ।
আর বাকি দিন আমি নির্লজ্জের মতো আনত নয়নে
সাজাব থালা ক্ষুধা লেপে দিয়ে-
এভাবেই তো চলে যায় আমার
একটা বছরের  তিনশো চৌষট্টি দিন
ধীরে ধীরে অপমান ,লজ্জায় ,খুদায় জড়ানো ,
অভাব আন্ধকার মুখে মেখে ।
তবু আজ সে নুতন –
একটি ছাই লুটি দিয়ে ঘষা মাজা
চক চকে পিতল থালায়,
শঙ্খ , দুটি ধান দূর্বা ঘাস ,
আমি সাজিয়েছি যত্ন করে –
রয়েছি অপেক্ষায় বসি তপ্ত দুপুরে –
পুকুর ঘাটে আম গাছের  ছায়ায় –
সন্ধ্যায় দেব উঠনে গুড়ো চাল গোলা আলপনা ।
আমি একা নই –
শ্যামলী , আনিমা , কবিতা , মালা ,
মাধবী , দিপালী , ঝুমা, কল্পনা –
হত দরিদ্র গ্রাম্যবধূ আমরা কজনা ।