মেয়েটি এবাড়ি ওবাড়ি করে কাজ,
একটা ছোট্ট মেয়ে আছে সবে চার ক্লাস,
বস্তির ভাড়া ঘরে ওদের বাস।
স্বামী ছেড়ে চলে গেল-
সে কবেকার কথা,
তবু বলতে গিয়ে চোখে তার জল এল ।
মনে হয় যেন এইতো সেদিন
ঘরেতে নেবেনা ওরা,
তাই বাড়ি বাড়ি কাজ করা।  
সবকথা শুনে বৌদিমনি শিক্ষিত গৃহবধূ,
বয়সে সমান তার, বলে ওঠে ভীষণ রেগে-
তোকে যে ঠকাল বড়
মামলা দে না ঠুকে।  
দেখবি কেমন মজাটা পাবে,
খোরপোষ পেয়ে যাবি, পাবি ন্যায়বিচার।
এখনও সমাজে কি করে হয়
মেয়েদের ওপর এত অত্যাচার।
জানেনাতো ওরা
এখন মেয়েদের কত আছে অধিকার,
সহজে ঠকানো যাবেনা আর।
কাজের মেয়েটি বলে,  
আমি মূর্খ মেয়ে মানুষ।
আইন আদালতে লাগে ভয়
যদি ওর কোন ক্ষতি হয়।
স্বামী তো আমার।
মানুষটা যে খুব খারাপ ছিল তা তো নয়-
মদ বিড়ি খায় না মোটে
বিয়ের জন্য মেয়ের বাবার
এর চেয়ে আর ভালো পাত্র কি আর জোটে।
শ্বশুর ঘরে অভাব ছিল না কোন।
আমার স্বামীর একার রোজগারে
সংসারে আটজন খায় পরে।
তারপর এল সেই দিন
কারখানা হল হঠাৎ বন্ধ।
চোখের সামনে যেন সব অন্ধকার,
দিনে দিনে বাড়ে মদ, গাঁজার নেশা তার,
আমার ওপর ও চলে অত্যাচার।
নেশার কবলে পড়ে মারধর করে
দিল ঘর থেকে বের করে।
মদ, গাঁজাতেই সব শেষ
আমি ও যাইনি ফিরে আর ,
তার সাথে জোর করে বাঁধিনি সংসার।
আমি মূর্খ নারী
এই তো আছি বেশ-
রাঁধা-বাড়া ধোয়া-মোছা সহজেই পারি,
তাই বাড়িবাড়ি কাজ করি।
জীবনটা নয় খুব সোজা
তাই বলে আদালতে গিয়ে
ওর কাঁধে কেন আর হই বোঝা।
যে যেতে চায় সে যাক-
তাতে তো দেখিনা কোন আপরাধ,
শুধু আপমান বুকে বাজে-
বড় লজ্জা লাগে, পুরুষের এত সহজ পরাজয়।
আমার নিজের রোজগারে
জুটে যায় ভাত শাক
শুধু মেয়েটা আমার মানুষ হয়ে বেঁচে থাক
আছে দায়ভার, আমার একার।