১৯৬৯ সালে ফরিদপুর উন্নয়ন সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা গঠন করা হয়। ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আহবায়ক ছিলো আহম্মেদ আলী মুন্সী। সাধারণ সম্পাদক ছিলো আ ন ম আবদুস সোবহান, সহ-সভাপতি ইঞ্জি. এম এ রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ জ ম আমীর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক চিত্তরঞ্জন পাল, কোষাধ্যক্ষ নীপেন্দু কুমার সিনহা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিহির কর্মকার, প্রচার সম্পাদক এম এ মতিন, নির্বাহী সদস্য আতাহার খান, আমি (শেখ সামসুল হক) প্রমুখ। সংগঠনের সাথে যুক্ত সবাই তখন ছাত্র। ১৯৬৯ থেকে ৭১ এর ২৪ বা ২৫ মার্চ পর্যন্ত কার্যক্রম চলমান ছিল। দেশ স্বাধীনের পর আবার ধীরে ধীরে কার্যক্রম সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ সংস্থা থেকে ১৯৭৫ সালে গুড় বাজারে সাহিত্য সভায় আলোচনা হয় সংস্থাকে জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। তখন অনেকেই অনেক ধরনের প্রস্তাব করে। তারপর সবাই সাহিত্য পুরস্কার প্রদানের বিষয়টিও প্রস্তাব করে। এটি গৃহীত হয় প্রথমে ১টি সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে আরো বিভিন্ন বিষয়ে দেয়া হবে। এই সভায় আমি (শেখ সামসুল হক), মিহির কর্মকার, আতাহার, চিত্তরঞ্জন পাল সহ আরো অনেকেই বিভিন্ন নামে সাহিত্য পুরস্কার দেয়ার বিষয়ে মতামত রাখে। কিন্তু আতাহার প্রস্তাব করলো মধ্যযুগের কবি আলাওল ফরিদপুরের কবি হিসাবে তার নামে সাহিত্য পুরস্কার দেয়া যায়। অনেকেই আলাওলকে চট্টগ্রামের লোক মনে করেন। মূলত: তার লেখায় তিনি ফরিদপুরের বলেই গবেষণকরা মনে করেন। এটি তখন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তারপর এইভাবেই পুরস্কার দেয়ার বিষয়টি গৃহীত হয় পুরস্কারের অর্থ রাখা হয় ১০০০ (একহাজার টাকা)। এই পুরস্কার পরে অন্যান্য বিষয়েও প্রদান করা হয়। আমি ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পদে যেমন প্রথমে সদস্য পরে প্রকাশনা সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছি। আলাওল পুরস্কার প্রথমে পেয়েছিন কবিতায় আবু হেনা মোস্তফা কামাল। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে কবিতায় রফিক আজাদ ও মীর্জা আব্দুল হাই ছোটগল্পে। তার অনেকেই পেয়েছেন-কবিতায় আসাদ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, মুহম্মদ নুরুল হুদা, খোন্দকার আশরাফ হোসেন, বশীর আল হেলাল।  ছোটগল্পে সেলিনা হোসেন , নাসরীন জাহান, প্রবন্ধ সাহিত্যে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, অসীম সাহা প্রমুখ। এই পুরস্কারের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ফরিদপুর জেলা বোর্ড ও পৌরসভা। আজিজুল হক সাহেব পর্যন্ত কার্যক্রম গতিশীল ছিলো। তারপর বেশ কয়েক বছর কার্যক্রম কিছুটা মন্থর গতি ছিলো। বর্তমানে অর্থের মান উন্নীত হয়েছে। যারা এখন নেতৃত্বে আছে তারা আবার এটাকে গতিশীল করা চেষ্টা করছে। ২০১৮ সালে ৫০ বছর পূর্তি হবে। এর সফলতা ছড়িয়ে যাক এটাই প্রত্যাশা।