তখন কেবল কলেজের বারান্দায় হামাগুড়ি খাচ্ছি,
পাশের বাড়ির মেয়েটি নবমে।
সাদামাটা পোশাক সুদীঘল কালোকেশ,
টুলপড়া কপলে রৌদ্রের হাসি,
বেশ বুদ্ধি হয়েছে মেয়েটির।
রূপে সদ্য যৌবন প্রবাহ,
ওড়নার ভাঁজে পয়োধরের  লুকোচুরি,
শ্যাম বদনে কিম্বার্লীর হীরকখনি।
নয়নের প্রান্ত যেন সদ্যফোটা একগুচ্ছ সরষেফুল,
আমি যেন প্রণয়  পিয়াসী চাতক।


শ্রাবণের এক গোধূলি লগ্নে,
ছোপ ছোপ কালো মেঘ এসে জমেছিল আমার বারান্দায়  চিলেকোঠায়।
সহসা জানালার গ্রিলধরে লজ্জাস্নাত সেই মুখটি !
সন্ধ্যার আবছা আলোয় খয়েরি রঙের শাড়ি
বেশ মানিয়েছিল  তাকে।


মেয়েটি এসেছিল পাটিগণিতের সমাধান কষতে।
কিত্ত, আমি অংকে ঢের কাঁচা।
স্বভাবতই,
সমাধান কষতে কষতে গভীর রজনী।
তথাপিও অনুরোধ,
আরও দুটো.........
অবাক দৃষ্টি তার পানে।
বাহিরে অঝর বর্ষণ,
একই টেবিলের দু'পাশে নির্জন দুটি প্রাণ।


আচমকা ঝড়ো পবনে নিভে গেল লণ্ঠনদীপ !
ব্যতিব্যস্ত প্রদীপ জ্বালাতে,
কোমল হাতের আচানক পরশ  থমকে দিলো আমায়।
আবছা আঁধারে তার রূপ যেন কাদম্বীর আঁড়ে পূর্ণশশধর।
অপলক লোচন বলছে যেন,
থাক না এমন আরও কিছুটা ক্ষণ।
বিকর্ষণ আবেশ উল্টো ঘুরিয়ে,
পরম উন্মাদনায় মুখোমুখি দু'জন !
দু'জনার তপ্তশ্বাস,
যেন আঁচ দিয়ে যাচ্ছে নিথর কপলে।
যৌবনের চৌম্বকীয় আর্কষণ,
যেন পিষে দিতে উদ্যত সকল দূরত্ব।
হঠাৎ  লণ্ঠন হাতে,
মেয়েটির বাবা !


অতঃপর,
আবেগের চাদর মুড়ে কেটে চলে  কয়েক বসন্ত,
অব্যক্ত বচন ব্যক্ততার ব্যকুল তিয়াসে।