বাহিরে ভীষণ ডামাডোল গোলাগুলি রক্তারক্তি;
নাগরিক তার নাগরিকত্বের অধিকার দূরে ফেলে
প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত। ভেতরে চলছে জোর কদমে
ছাপ্পা ভোট। পোলিং অফিসারের গলায় ছুরি আর
প্রিজাইডিং অফিসারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে
একদল ভয়ঙ্কর কণ্ঠ বলছে -
হুশ.......
'তুমি কিছু দেখো নি।'
অশ্বত্থ গাছের উপর ঝুলছে শ্রমিক নেতার দেহ।
তার গায়ের সাথে লেপটে থাকা জামাটা থেকে তাজা
রক্ত ঝরছে ফোঁটা ফোঁটা। সবাই জানে কে মেরেছে!
পুলিশ সকালে এসে ধরে নিয়ে গেলো মালিক কে ।
অতঃপর পুলিশের টেবিলে এক লক্ষ টাকা শুয়ে দিয়ে
চশমা খুলতে খুলতে মালিক বলছে-
হুশ ......
'তুমি কিছু দেখো নি।'
বড়বাবুর ঘরে সাত ফুট দৈর্ঘ্য ছয় ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট
দর্শক-হীন খেলার মাঠে চলছে অবৈধ নগ্নতার
টি- টুয়েন্টি ম্যাচ। বাড়ির নতুন চাকর রতন চা দিতে
এসে সে খেলা দেখে ফেলেছে ! উপায় নেই ।
এমন ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে মহা বিপদ। তাই তড়িঘড়ি
বড়বাবু এক জোড়া বড়ো বড়ো লাল চোখে
তার দিকে এসে বলছে--
হুশ.......
'তুমি কিছু দেখো নি।'
বড় কোম্পানি তে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাতের
আঁধারে এক ঝাঁক যুবতী কে অন্যত্র পাচার করেছে
কিছু পিশাচ পাচারকারী! স্থানীয় প্রশাসন সব জেনেও
অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো করছে পায়চারি। শুধু কখনো কখনো
পরিস্থিতির চাপে তাদের গ্রেফতার চলে লোক দেখানো।
পরক্ষণেই ঠাণ্ডা ঘরে কর্তব্য সততার বিক্রি; আর
পাচারকারীরা রফার অঙ্ক কষতে কষতে বলছে -
হুশ.......
'তুমি কিছু দেখো নি ।'
এরকম কত কি দেখেও; আজও চোখে না দেখার
কালো চশমা পরে, কখনো লোভকে সঙ্গী করে, কখনো
ভয়কে সাথী করে এগিয়ে চলছে জীবন। চলছে জীবনের
সাথে জীবনের যুদ্ধ। আর এমন এক বাস্তবতার কবিতা
রচনা করতে করতেও, জীবনের বুকে সাম্যতা ফিরে
পাওয়ার আশায় এক বুক কষ্ট নিয়ে আকাশের দিকে
মুখ করে এক কবিও উপরের কাউকে যেন বলছে -
ওগো ........
'তুমিও কি কিছু দেখ নি ?'
**************