দুটো রুটিতে পেট ভরে না বাবু
যেই বলল কাজের মেয়ে টুসি,
চড়া রাগের রোদ মাথায় উঠলো
কর্তা মারলেন কিল চড় ঘুসি।
বারান্দাতে রাতে শীত করে বাবু
দাও না বাতিল একটা কম্বল,
বাবুর কটাক্ষের তির্যক ফলা এসে
ঝরালও তার দুটি চোখে জল।
আবর্জনার মতো পড়ে থাকে টুসি
অভাবের জ্বালায় পেটের দায়ে,
দিনের পর দিন নিপীড়িত সে
রাত দুপুরে ভয়ে উঠে চেঁচিয়ে।
এই তো সেদিন সে বাসন খানা
ধুতে গিয়ে, যেই ভাঙলো প্লেট,
সেভিং রত কর্তা বাবু ছুটে এসে
গালি দিয়ে, হাত মারলো ব্লেড।
সময়ের স্রোত সাঁতরে সাঁতরে
এখন টুসি হয়েছে বেশ সবুজ ,
আট হাত কাপড়ে শরীর লুকায় না
দীপ্যমান তার যৌবন পিলসুজ।
দৃষ্টি এড়ায় না এসব কর্তা বাবুর
চোখে লোলুপতা করে জ্বলজ্বল,
হিংস্র পশুর মতন ঝাঁপিয়ে পড়ে
খেলে অশ্লীলতার শরীরী ফুটবল।
খেলার পরে বিপদ বুঝতে পেরে
কর্তা সিদ্ধান্ত নিলেন তাড়াতাড়ি,
মিথ্যে চুরির দায়ে টুসি কে আজই
ছাড়া করতে হবে এই বাড়ি।
কঠোর অপমানের বোঝা মাথায়
খাচ্ছে টুসিকে যন্ত্রণার মারীচ,
পথে পথে ঘুরে কাজের খোঁজে
গর্ভে নিয়ে নতুন প্রাণের বীজ।
নিরুপায় টুসি কি করবে এখন
সমাজও তাকে ঠেলে দেয় দূরে,
চাঁদের মেয়ে মিথ্যে কলঙ্ক নিয়ে
নিলো আত্মহননের পথ করে।
ডুবে যায় চাঁদ আসে রক্তিম ভোর
বয়ে চলে জীবন প্রবাহের ধারা,
অত্যাচারীদের হাতে পীড়িত হতে হতে
নিভে যায় এ রকম কত টুসি'রা।
*****