বৃষ্টি ভেজা পুকুর পাড়ে হাঁস ঘুমের মতো নিশ্চিন্ততা
ওদের কপালে লেখা নেই।
চিমনির মতো কালি পড়া চোখে
দপদপ করে জ্বলে অভাবের আগুন।
ফুটপাতে ইট মাথায় দিয়ে, চটের বস্তায় শরীর
লুকিয়ে ওরা জিরায় শীতের রাতটুকু আস্তাকুড়ের
বেওয়ারিশ কুকুর বেড়াল'দের ছড়ানো
ভাইরাস'দের সাথে, ডেঙ্গু কে পাশে ফেলে।
অহংকারীদের পদাঘাত পিঠে নিয়ে।
বর্ষার রাত কাটায় গাছের ফোকরে
ত্রিপল মুড়ি দিয়ে। না তাড়াতে পারা দারিদ্রতার
যক্ষা বুকে পুষে রেখে...
ওরা ম্যানহোলের ময়লা সাফ করে,
কেউ কুলি-মজুর, কেউবা কোদাল-
শাবল দিয়ে মাটি ঠোকরায় টিকে থাকার তাগিদে...
গ্রীষ্ম রোদের চোয়ালে আটকে থাকা মাথা থেকে
যখন ঝরে পড়া ঘাম ভেজায় ওদের পায়ের কালো পাতা,
তখন চোখে ভেসে ওঠে মাটির আঁচলে গড়াগড়ি
খেয়ে বেড়ে ওঠা শীর্ণ দেহের বাচ্ছা গুলোর কথা,
যারা চেয়ে আছে এক মুঠো মুড়ির অপেক্ষায়।
ওরা নিকোটিনের স্বাদে ক্লান্তিকে ঘুম পাড়িয়ে কাজ করে
ছেলে পিলের কান্নার স্রোত থামাবার কথা ভেবে।
একটা দিনের সূর্য যখন লুকায় রাতের পকেটে,
সব কষ্টের ছোবল সহ্য করা ওদের লোহার পাঁজড়ে,
শুষ্ক পেটে ভাসে তৃষ্ণার তীব্র স্লোগান...
দিন আনা দিন খাওয়া জীবনের আঙিনায় না জোটা
পর্যাপ্ত খাবারের তৃষ্ণা সাথে চলে লড়াই; যেন
নেই নেই নিয়েই বেঁচে থাকা। তবুও
ইট ঘেরা উনুনে আধ সেদ্ধ চালের স্বাদ যখন
মরুভূমি জিভে পড়ে, পায় সাময়িক মরূদ্যানের শান্তি ...
ভোরের আলোর ভাঁজে সকাল হাসে
প্রকৃতির বুকে নতুন গান লেখে মৌমাছি;
তবু ওদের বদলায় না চেনা রুটিন,
''স্বাভাবিক জীবনের বাহিরে যেন ওদের জীবনের আবর্তন,
পিচ ঢালা রাস্তার মতন থাকে ওদের স্বপ্নের রঙ কালো।''
*****