উনুনে ঘুঁটে পোড়া তাজা ছাই এ দাঁত মাজতে মাজতে  
                সকাল শুরু মানিকের ...
   তুলসী তলায় ইষ্ঠ দেবতাকে একটা প্রণাম ঠুকে,
        ব্যাগে দুটো শুকনো মুড়ি বেঁধে
সাইকেলের চাকায় দম দিতে দিতে উপস্থিত
           ২নম্বর প্ল্যাটফর্মে,  
         ছয়'টা পনেরো'র লোকাল ট্রেন ...  
  দূর শহরে ইমারত গড়ার যোগাড়দার সে  
''ইট বালি সিমেন্টের সাথে মাখামাখি
                    তার জীবনের মেরুদন্ড।''
  নূন্যতম চাহিদা পূরণের ছোট্ট আশা নিয়ে
         ছুটে চলা নিরন্তর। রোদের  
  আগুন কামড় মাথায় নিয়ে, ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে,      
মালিকের কটাক্ষ কটূক্তির চাবুক পিঠে সয়ে
       নিত্যদিন তার শুধুই কাজ করে চলা...

    ইটের পর ইট গাঁথা হয় ওলন ঝুলিয়ে
     এক তালা দু তালা করে চৌদ্দ তালা
          আকাশ ছুঁয়ে ইমারতের শিং ...
শরীর নিংড়ানো পরিশ্রমের বিন্দু ঝরিয়ে তার
  শুষ্ক মরুভূমি হাতে পড়ে এক পশলা খুচরো অর্থ।    
     মালিকের করাল চোখের সামনে
          মুখ বুজে নিতে হয় কম পারিশ্রমিক,
    মুখ খুললেই কাজ হারাবার সংশয়!


   বৃদ্ধ সূর্যের চোখ যখন নিভু নিভু
        পাখিরা বাসায় ফেরার তরে
                 ঝাপটায় তার শেষ ডানা,
  হাওয়াদের ঠোঁটে যখন ভাসে কাজ সমাপনের গান;
        মানিক তাকিয়ে থাকে শেষ ইট'টা
                      গাঁথা হওয়ার দিকে ...
           সকল অস্বস্তি বোধ সকল পর্যুদস্ত'তার
     অলি গলি পাশ কাটিয়ে, পাঁজড়ে পাঁজড়ে  
          জমাট বাঁধা ক্লান্তি নিয়ে ফিরে আসা...
      অবসন্ন শরীরে নাকে-মুখে কিছু খাবার গুঁজে  
      আবার চোখের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে যাওয়া
               একটা দিনের জিভের তলায়......  


                             *****