পচন ধরা খড়ের চালার শরীর ফুটো হয়ে
বর্ষার জল পড়ছে টপ টপ ...
ভেজা কাঠে কোন রকমে আগুন ধরিয়ে
চোঙা দিয়ে ফুঁ দিতে দিতে চাল ডাল চুলোয়
তুলে রান্না চাপিয়েছে বউ'টা।
দুধের শিশুটা স্তন্য পান করতে করতে
অনেক আগেই ঘুমিয়ে গেছে অপত্য
স্নেহের আদরে কোলের মধ্যে;
দ্বিতীয় শ্রেণীর অঙ্ক বইটা পলিথিনে ভরে
ঘুণ ধরা বাঁশের খুঁটোয় পোতা পেরেকে
ঝোলানোর চেষ্টায় মশগুল বড় বাচ্চা'টা...
মাটিতে বসিয়ে রাখা বালতি, মগ, জামবাটিতে
জমা হচ্ছে টপ টপ করে পড়া বৃষ্টির কণা।
বউটার কান্নার স্রোত থামা নিঃস্পলক
নীরব চোখের দৃষ্টি সময় গোনে
মেঘ গোপনে যাওয়ার।
এক চিলতে আলো এসে হয়তো বলবে-
'এবার তোমাদের দিন যাপন বদলাবে
পেট ভরবে
ছেঁড়া কাপড় জামা'টা নতুন হবে' .....
বুকে আশারা ঢলে পড়ে আবার মুহূর্তের মধ্যই
ফসিল হওয়ার তরে হৃদয়ের ভাঁজে !
মরদ'টা কাক ভেজা হয়ে
ঘরে এলো! গামছায় বাঁধা কিছু কাঁঠালের বিচি।
বড় রাস্তার ধারে মাচা'র পাশে রিক্সা ঠেকাতে গিয়ে
দেখতে পেয়ে কুড়িয়ে এনেছে,
আড্ডা দেওয়া লোক জনেরা আজ হয়তো কাঁঠাল
খেয়ে ছিলো জমিয়ে...
গা হাত মুছে, স্যাঁতস্যেঁতে জামা গলিয়ে
ঘরের শুকনো কোণটাতে এক সাথে
হলুদ ভাতের অভাব জড়ানো আয়োজন বসে।
অপূর্ণ অতৃপ্ত থাকে পেট!
আধপেটা খাওয়া পেটের চিৎকার থামানোর চেষ্টা চলে
গলার নালীতে শীতল জল ছিঁচে;
শূন্য হয় ক্ষণিকেই থালা উপর
সামান্য ডাল ভাতের ছোট্ট ঢিপি।
হাতের তালুতে, আঙুলে, লেগে থাকা দু একটা
হলুদ কণাও চেটে চেটে পরিষ্কার হয়;
অভাবকে সাথে নিয়েই দিন ফুরায়,
ফুরায় জীবন ......
********