আমি সেই বয়সের কথাই বলছি
বাবা-মা, ভাই-বোন আমার কত আপন-প্রিয়জন,
বাবার হাত ধরে মক্তবে ছুটে যাবার বেলা
স্বর্গের সুখানুভূতি নিয়েই ছুটতাম
মায়ের বুকে মুখটি লুকাবার বেলা
স্বর্গীয় সুখে মোহাচ্ছন্ন হতাম।
একই বিছানায় ভাই বোনেরা গাদাগাদি শুয়ে পড়া
কিচিরমিচির কলরবে ঝংকৃত হত পুরো ঘর।


আমি সেই বয়েসের কথাই বলছি
খেলার সাথী-বন্ধুরাই আমার সব
গায়ে কাদামাটি মেখে চুপসে যাওয়া ফুটবলে
লাথির পর লাথি কি যে মজা-কি যে আনন্দ
ভরা বরষায় পানিতে ঝুপঝাপ-সাঁতার কাটা
মাটের প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ক্লান্তিহীন দৌড়-পালানো
কিংবা স্কুলের বই হাতে সারিবদ্ধ পথচলা।


আমি সেই বয়েসের কথাই বলছি
নামাজ শেষে সহকর্মীর জন্য দারিয়ে থাকা
মসজিদের ঠিক দোয়ারে
রেস্টুরেন্টে পাঁচ টাকার ভাগাভাগি নাস্তা
ডাল আর পরোটা খাওয়া কি যে স্বাদ-তৃপ্তির
কথার পর কথা সাজিয়ে সময়ের অপচয়।


আমি সেই বয়েসের কথাই বলছি
রাজপথে-মিছিলে-শ্লোগানে- আন্দোলনে
মুষ্টিবদ্ধ হাত,শিকল ভাংগার গান
বজ্রকন্ঠ নারায়ে তাকবীরের
যেন আমিই নেতা,আমিই কর্মী,আমিই যোদ্ধা
হাজার সহযোদ্ধার ভিড়ে।


আমি সেই বয়েসের কথাই বলছি
ভাবনায় লাত্থি মেরে ভয় শংকাহীন ছুটে চলা
ভয়কে মুখ ভেংচিয়ে,ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়া
স্বপ্নের সাথে খেলা করা
রংধনুর সাত রংয়ে সাজানো পৃথিবীতে
নিজেই যখন মহা নায়ক
আমি সেই বয়সের কথাই বলছি।