গ্রামের শেষে মেঠো পথে একটু গেলে
বিশাল বিল, আমরা বলি বড় বিলে।
কর্মব্যস্ত জীবনের শেষে স্মৃতির পাতা উল্টে
চক চক করে ওঠে সেই বড় বিলে।
বয়স কত হবে, ৫ কিংবা ৭ হাফ‌ প্যান্ট সবে,
বাবার সাথে মাছ ধরতে গেছি পলো দিয়ে।
আধা হাত কৈ, শোল, মাগুর, বোয়াল মাছে,
হাড়ী ভরে এনেছি একদিন, খেয়েছি দু'মাসে।
দু'টি ফসল হতো, পানিতে ধান, চৈতালী শুকনাতে।
বাকী ছয় মাস বিশাল ক্ষেত্র নিষ্ফল থাকত পড়ে।
ফাল্গুন, চৈত্র মাস ধু ধু মাঠ ফেটে চৌচির
মাঝে মাঝে নাড়া পোড়ানোর ধুঁয়া উদগির।
বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য মাসে, পুবালী বাতাস
সবুজ ধান ক্ষেতে দোলা দিয়ে কৃষকের মনে
যুগিয়ে যেত বেঁচে থাকার আশ্বাস।
আষাঢ় শ্রাবণ মাসে কৃষকের মন উদগ্রীব
এই বুঝি তলিয়ে যায়, সারা বছরের খোরাক
যোগানো বড়বিল।
ভাদ্র আশ্বিন মাসে তালের ডোঙ্গায় ঘুরে
কৃষকের মন হয় রঙ্গীন নয়তো মলিন।
কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে বিল পানি হীন,
মাঠে মাঠে সোনালী ধান, কৃষক রঙ্গীন।
আশা নিরাশার দোলায় দোলানো
আমাদের বড় বিল।