আমি মৃত্যু পথ-যাত্রী শাহিনুর বলছি,
শোনছ কি কেউ মোর কান্নার সুর?
আমি যে মরন শিখায় জ্বলছি,
যেতে বুঝি হবে আমার অচিনপুর।  
তারাতারি মুক্ত কর আর যে দেরি সয়না,
আমার জন্যে কাঁদছে বুঝি আমার সোনার ময়না।
দেড় বছরের বাবু আমার, রেখে এসেছি ঘরে,
আমায় ছাড়া বাবু আমার থাকবে কেমন করে।
তোমরা বুঝি শেষ রক্ষা করতে পারলে না,
আমার বুঝি এসে গেছে শেষ পরোয়ানা।
এই বুঝি দেহ থেকে যাচ্ছে আমার প্রাণ,
এক মুহূর্ত, দেখতে মন চায় আমার বাবুর মুখ খান।  
এমন ভাগ্য রেখেছিল মোর আপে পরোয়ারে,
অবুঝ বাবু, আমার ছাড়া থাকবে কেমন করে।
প্রভু, যাবার কালে, তোমার কাছে এই মিনতি করি,
বাবুকে মোর সুখে রেখ সারা জীবন ভরি।
বাবু, তোমার জন্য কিছু আমি করতে পারলাম না,
ক্ষমা চাইছি তোমার কাছে হতভাগী মা।



(সাভার ট্র্যাজেডির নয়তলা ভবনটি মাথার ওপর পড়ার পরও মরতে মরতে বেঁচে ছিলেন শাহীনা আক্তার। ধসের ৮০ ঘণ্টা পর তাঁকে জীবিত খুঁজে পান উদ্ধারকারী কিছু তরুণ। এর পরের ৩০ ঘণ্টা তাঁকে বাঁচানোর মরণপণ লড়াই করেন স্বেচ্ছাসেবক এবং সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় অপ্রত্যাশিত অগ্নিকাণ্ড। মরণের পূর্বে তার কিছু আকুতি, তার অবুঝ শিশুকে একটি বারের জন্য দেখার যে অভিপ্রায় ছিল সে ঘটনার অবলম্বনে।)