সোনাদিঘির পাড়
তিন রাস্তার সমাহার
বৃদ্ধ একটা নীম গাছ
ঝড়ে মাথাটা ভেঙ্গেছে অনেক আগে।
বিস্তৃত শাখাগুলির ঘন পাতা
ছায়া দিচ্ছে দিনভর
নিরবিচ্ছিন্ন-নিঃস্বার্থ ভাবে
সেই ছায়ায়
সকাল থেকে রাত আটটা
দুপুরে ঘন্টা দুয়েক বিরতি
দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভিক্ষা করে
সত্তরউর্ধো এক বৃদ্ধা
না কোন আবদার
না কোন আওয়াজ
হাত বাড়ায় লোক দেখে।
কেউ কিছু দিলে
শুধু একবার দেখে-
রেখে দেয় ঝুলিতে।


মুখ খুললো যেদিন
কোন আবদার নয়
দৃঢ় কণ্ঠে অভিযোগ-
অবশেষে পাঁচ টাকা ?


অভিযোগ খন্ডন করছে বিবাদী-
আর্থিক কষ্টে ছাত্র জীবন
তারপরে বেকারত্ব
চাকরী পেতে বছর খানেক।
দুই বছর আগে
চাকরীতে প্রথম বেতন
হাতে অনেক টাকা
চকচকে কড়কড়ে নোট
কয়েক হাজারের সাথে
একটাই নোট পঞ্চাশ টাকার।
ঐটা মনে হয়েছিল
খুব ছোট
খুব তুচ্ছ
দিয়ে দিয়েছিলাম তোমাকে
এবং একই হারে প্রতি মাসে।


কিছুদিন পর বিয়ে
বৌ-এর শতেক দাবী
বেড়ে গেল খরচ
তখন কুড়ি টাকা
এবং একই হারে প্রতি মাসে।


তার কিছুদিন পর
বৌ-এর অপত্তি
গ্রামে থাকতে নারাজ।
আমার সাথে থাকতে
চলে এলো শহরে।
উচ্চ মূল‌্যে বাসাভাড়া
বিদ‌্যূৎ বিল
গ‌্যাসের বিল
খরচ বেড়ে গেল দ্বিগুন।
তখন দশ টাকা
এবং হারে প্রতি মাসে।


গত মাসে বৌ-এর
বাচ্চা হয়েছে একটা
তাই, বুঝতেই পারছ
এখন পাবে পাঁচ টাকা
এবং একই হারে প্রতি মাসে।


বৃদ্ধা ভিখারী
দাঁতহীন মুখে
মুচকি হেসে বললো,
বুঝবনা কেন-
"আমার টাকায় সংসার চলাচ্ছ"


০১-০১-১৯৯৫ইং