এ গ্রামের অনেক কিছুরই বদল হয়েছে....
ঐ তো শহর ছুয়া যে রাস্তাটার উপর দিয়ে
আলতা পায়ে হেটে হেটে এ গায়ে বধুরা আসে,,,
আবার এ গায়ের মেয়েরা
ঘোমটা দিয়ে যায় অন্য কোন গ্রামে।
সে রাস্তাটির বদল হয়েছে বেশ।
ইটের ভাঙ্গা দেহটির উপর
পিচ ঢালা পথেরও হয়েছে ডিজিটাল রূপ ।
ঠেলা গাড়ির জায়গা চিনিয়ে নিয়েছে
চিত্রনায়িকা সুচিত্রা সেনের গাড়িগুলো।


কিন্তু এই রাস্তার উপর দিয়ে আসা কল্পনা বৌদিদের জীবনটা আজো সিনেস্টারএ সাদা কালো ছবি।
পড়নের শাড়িটা নাকি এর চেয়ে
আর ভাল রঙিন হয় না।
স্বপ্নের কথা নাইবা বলি,
কল্পনা বৌদি কখনো আলমগীর আয়নায়
শাবানার মত চোখ রেখে কিছু  কল্পনা করে নি'
তা বৌদির নব্য বিবাহিত দেহটা মানেই না।
কল্পনা বৌদি কখনো লুকিয়ে লুকিয়ে
কোন সুদর্শন ডাকাতের জন্যে
অপেক্ষা করতে রাজি হয় নি,
তা তার চোখের কোনের কাজল
বিশ্বাস করেই না।


তবু বিশ্বাস করতে হয় বৌদিকে,,,
এতটুকু বিশ্বাস করে দাসত্ব জীবন
গ্রহণ করার নামইতো সতী সাবিত্রীর বিয়ে।
সেই সকাল বেলা কাক জাগার আগে
স্বামীর চরণে চরণ লাগার অপরাধে
কুয়াশার চাদর গায়ে
পুকুরে স্নান করাও যে এক বিশ্বাস।


তারপর?
তারপর বিয়ের কয়েদি জীবনের নতুন নতুন পরীক্ষা।
এ কাজ সে কাজ ; এ আদেশ সে উপদেশ
শুনতে শুনতে তাদের বিবাহিত জীবন হয় উদযাপন।
সারা দিন মেহনতির চোখে
একটু পতি দর্শনের বাসনা
যেন সোনার থালায় সোনার অন্ন ভোজন!
সারাটা দিন নিশিথ-নারায়ণের একটু আওয়াজ শুনা  
যেন এক চাতকের বৃষ্টি পিপাসা।
সারাটা দিন কারো মাথার চুলে অঙুলি চালিয়ে
একটু একটু লজ্জা পাওয়া লজ্জাহীন কামনায়;
এ যেন কল্পনা বৌদিদের
কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার যাত্রা!


পরিষ্কার ভাষায়, নিষিদ্ধ;
কল্পনাদের একান্ত বধু জীবন দাসত্ব জীবনে।
নারী জীবনে এমন একটা
বড় সংসার যার কপালে জুটে
তার দাম্পত্য জীবনের আয়তনটা ছোটই হয়!
বড় করতে গেলেই
সংসার জীবনটাই হয়ে যায় অসাংসারিক ।
তাই কল্পনা বৌদিদের জাগতে হয়
উত্তমকুমারদের ঘুমে
আবার সজ্জিত চেহারায় নিদ্রায় যেতে
উত্তমকুমারের ক্লান্ত শয়নে!


বদল হয়েছে পথ,বদল হয়েছে গাড়ি
কল্পনা বৌদিরা সালোয়ার কামিজের যুগে
এখনো পড়ে
সেই পুরুনো দিনের  পুরুনো ঘোমটার শাড়ি।